ঈশ্বরদীতে মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ৬০ টাকা কেজি দরের বেগুন এখন ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেলে উপজেলার বরইচরা হাটে এ দরে বেগুন বিক্রি হতে দেখা যায়। সন্ধ্যার পর আরও কমে পাঁচ টাকা দরেও বিক্রি হয়েছে বেগুন। অথচ রমজানের প্রথমদিন সকালে ঈশ্বরদী বাজারে ৬০ কেজি দরে বিক্রি হয়েছে এ সবজি।
বরইচরা হাটের সবজি বিক্রেতা নাজির হোসেন জানান, আজ হাটে ব্যাপক সবজির আমদানি হয়েছে। বিশেষ করে বেগুন ও বাধাকপিতে হাট ভরপুর। বাজারের সবচেয়ে ভালো বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা কেজি। আর একটু নিম্নমানের বেগুন পাঁচ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সুজন হোসেন নামে আরেক সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘সকালে পৌর সবজি বাজারে বেগুন খুচরা বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ টাকা কেজি দরে। বিকেলে বরইচরা হাটে এসে দেখি বেগুনের বাজারদর পুরোই পাল্টে গেছে। এতো বেশি বেগুনের আমদানি হয়েছে যে ক্রেতাই পাওয়া যাচ্ছে না। যে যার মতো কম দামে বেগুন বিক্রি করছেন। আমি ৪৫০ টাকা মণ বেগুন কিনে ৪০০ টাকায় বিক্রি করছি। কিছু করার নেই। কাঁচামালের ব্যবসা এমনই হয়।’
মানিকনগর গ্রামের বেগুন চাষি আনিসুর রহমান বলেন, অসময়ের বেগুন চাষে গতবছর রমজানে চাষিরা ভালো দাম পেয়েছিলেন। তাই এবারও অনেকেই বেগুন চাষ করেছেন। কিন্তু এবার বেগুনের দাম তুলনামূলক অনেক কম। বেগুন চাষিদের এবার লোকসান গুনতে হবে।
হাটে সবজি কিনতে আসা চরমিরকামারী গ্রামের আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বেগুনের দাম শুনে আমি নিজেই অবাক হলাম। গতবছর রমজানে প্রতিকেজি বেগুন ৬০-৯০ টাকা কেজি দরে কিনেছি। এবার হাটে এসে দেখছি বেগুন ১০ টাকা কেজি। তাই এক কেজি বেগুন কেনার ইচ্ছা থাকলেও দাম শুনে দুই কেজি কিনেছি।’
ভেলুপাড়া গ্রামের ছবির উদ্দিন বলেন, ‘পাঁচ কেজি বেগুন আর ১০ কেজি বাধাকপি কিনেছি। দুটোই পাঁচ টাকা কেজি দরে কিনেছি। এগুলো ছাগলকে খাওয়াবো। বাজারে এক কেজি ভুসি ৫০ টাকা। সবজির দাম কমে গেছে। তাই ভাবছি কয়েকদিন ছাগলকে সবজি খাওয়াবো।’
ঈশ্বরদীর সবজির আড়তদার আমজাদ হোসেন বলেন, ঈশ্বরদীতে প্রচুর সবজির আবাদ হয়। পাশাপাশি বেগুন, আলু ও কাঁচামরিচ, পেঁয়াজসহ বেশকিছু সবজি ও মসলাজাতীয় পণ্য পাশের জেলা-উপজেলা থেকেও আড়তে আসে। প্রথম রমজানে বেগুনের যে দাম ছিল এখন তার চার ভাগের এক ভাগ দামও নেই। তবে কয়েকদিনের মধ্যে বেগুনের দাম আবার বেড়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।