পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হুমকিতে পড়ার আশংকা
———-
ঈশ্বরদী থেকে এস এম রাজা।।
আকষ্মিক ভাবে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে শতবর্ষী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হুমকিতে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে শুধু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নয় পার্শ্ববর্তী লালন শাহ সেতুও ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। গত ৩ আগষ্ট’২২ থেকে আজ ৬ আগষ্ট পর্যন্ত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন শাহ সেতু ও পার্শ্ববর্তী এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায়, পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ভাঙনের আশংকাজনক চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। স্থানীয় অনেকেই বলেছেন, এক সময় যখন পদ্মা নদী প্রমত্তা পদ্মারূপে দৃশ্যমান ছিলো তখন হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি স্প্যান পানির মধ্যেই অবস্থান করতো। স্বাধীনতা উত্তরকালীন সময়ে ফারাক্কা বাঁধের কারণে পানি সংকট ও নদীর নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় প্রমত্তা পদ্মা সরু নদীতে পরিণত হয়। সে সময় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পশ্চিম পাড়ের ভেড়ামারা অংশের ৪/৫ টি স্প্যান পর্যন্ত সরু নদীতে পানি থাকতো। বাঁকিটায় চর পরে সমতল ভূমিতে পরিণত হয়ে যেতো। এসময় স্থানীয় কৃষকরা নানা ধরনের ফসলের চাষ করতো এই চরে। গত মৌসুমেও বাদামসহ নানা ধরনের শষ্য আবাদ হয়েছে। এখনও শত শত বিঘা কলার আবাদ পরিলক্ষিত হচ্ছে এই চরে। আকষ্মিক ভাবে পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় আবাদকৃত কলার জমিও নদীগর্ভে বিলিন হতে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, পদ্মা নদীতে গত কয়েক দিন থেকেই আকষ্মিক ভাবেই পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। গত জুলাই মাসের ২৫ তারিখে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির পরিমান ছিলো ৯.২৫ সেন্টিমিটার। এখন তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ সেন্টিমিটারেরও বেশি।প্রতিদিনই ৩০-৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই কারণে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পদ্মা নদীর এই ভাঙনের কারণে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে কি না জানতে চাইলে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের একজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা জানান, নদীতে পানি যতই বৃদ্ধি পাক আর ভাঙন দেখা দিক, তাতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কোন ক্ষতি হবে না। এই ব্রিজের পিলার গুলো নদীর অনেক গভীর পর্যন্ত পাইলিং করে স্থাপন করা হয়েছে। নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও রেলওয়ে যৌথভাবে নকশা প্রনয়নের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। পানি কমে গেলে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
প্রেরকঃ এস এম রাজা
ঈশ্বরদী, পাবনা।