কুষ্টিয়া জেলা সংবাদদাতা।।
কুষ্টিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিদিনই জেলায় শনাক্ত ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এবং উপসর্গ নিয়ে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরও ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
একদিনে এটিই এখন পর্যন্ত জেলার সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। কুষ্টিয়া করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১২ জন এবং করোনার লক্ষণ নিয়ে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় যেখানে করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তির চাপ অব্যাহত রয়েছে। ২৫০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড এই হাসপাতালটিতে এখন শয্যার চেয়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ২৮০ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৮৭ জন। আর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন আরও ৯৩ জন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, হাসপাতালে শয্যা না থাকায় এখন রোগীদের মেঝেতে ও করিডোরে রাখতে হচ্ছে। হাসপাতালে এখন করোনা রোগীদের ভিড়ে তিল ধারণের জায়গা নেই। প্রতিদিনই হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগীর চাপ যেভাবে বাড়ছে তাতে সেবা প্রদান করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এদিকে কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৭৯২টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ২২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে নয় হাজার ৮৮৪ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ২৭৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৯৬ জনের।
নতুন করে শনাক্ত হওয়া ২২০ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ৮৩ জন, দৌলতপুরের ৫৯ জন, কুমারখালীর ২৬ জন, ভেড়ামারার ৩৪ জন, মিরপুরের ১১ জন ও খোকসা উপজেলার সাতজন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত জেলায় ৭০ হাজার ৮০ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৬৬ হাজার ৬৯৪ জনের। বাকিরা নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন।
বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ৩১৩ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২৭৯ জন এবং হোম আইসোলেশনে আছেন তিন হাজার ৩৪ জন।