কুষ্টিয়ায় দিবালোকে প্রকাশ্যে এক এএসআইয়ের গুলিতে শিশুসহ তিনজন নিহতের ঘটনায় তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নৃশংসা এই হত্যাকাণ্ডে হতবাক হয়েছেন গোটা দেশের মানুষ। ক্ষোভ ও প্রতিবাদে ভাসছে ফেসবুক। অপরাধীর কঠিন শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হতে দেখা গেছে অনেককে।
ত্রিপল মার্ডারের ঘটনায় পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন রায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে পুলিশ ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের কাস্টমস মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মসজিদে আশ্রয় নেয়া পুত্রকে টেনে বের করে প্রথমে চারটি গুলি করা হয়। পরে পিতাকে। সবশেষে গুলি করা হয় পলায়নপর মাতাকে। নিহত তিনজন হলেন আসমা খাতুন (৩০) ও তাঁর ছেলে রবিন (৬) এবং শাকিল (৩৫) নামের এক যুবক।
নিহত আসমা খাতুনের প্রথম স্বামীর সন্তান রবিন। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর দেড় বছর আগে পুলিশ কর্মকর্তা সৌমেনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সম্প্রতি প্রতিবেশী শাকিলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি সৌমেন। এজন্য ক্ষুব্ধ হয়ে তিনজনকে হত্যা করেছেন বলে পুলিশ জানায় ।
ফেসবুকে মোরশেদ আলম লিখেছেন, ‘‘তিনটি মানুষকে অমানবিক ভাবে দিনের আলোয় গুলি করে জীবন কেড়ে নিয়েছে সে সব অপরাধীকে চিহ্নিত করে সরাসরি সময় বিলম্বিত না করে উপযুক্ত শাস্তি কামনা করছি আইনের কাছে এবং যে স্টাইলে গুলিবিদ্ধ করছে ঠিক তেমনি ভাবে ক্রস ফায়ারিং করে মৃত্যু দেওয়া হোক এটা আকুল আবেদন আইনের কাছে। আর যেন কেউ নিরীহ মানুষকে গুলি খেয়ে মৃত্যুবরণ না করতে হয় সেটাই জোরালো দাবি জানাই।’’
আইনশৃঙ্খলা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে মোঃ মহসিন খান লিখেছেন, ‘‘প্রকাশ্যে দিবালোকে মসজিদ থেকে বের করে একটি শিশুকে গুলি করে হত্যা করা এবং তার পুরো পরিবারকে মেরে ফেলা এতেই বোঝা যায় দেশের আইনশৃঙ্খলা কতটুকু ভালো আমাদের সাধারন মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই এখন।’’
সজিব হোসাইন জয়ের মন্তব্য, ‘‘এর জন্য দায়ী বিচারহীনতা, শুধু ভীন্ন মতাদর্শী ও হুজরদের বেলায়ই দ্রুত বিচার কার্যক্রম হতে দেখি এমনকি তাদের জামিনও দেয়া হয়না অপরদিকে এমন গুরতর খুনি অপরাধীরা যদিও ধরা পরে ৬ মাস বাদে আবার বেড়িয়ে যায় এবং বীরদর্পে চলাফেরা করে,,, এমনটাই দেখে আসছি।’’
ক্ষোভ জানিয়ে আজিজুর রহমান তারেক লিখেছেন, ‘‘কি এক অসভ্য বর্বরতার মধ্যদিয়ে দেশ প্রবাহমান । নিরীহ এবং ভাল মানুষগুলো কোন না কোনভাবে হত্যা, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে । এই ঘটনার খোজ নিলে জানা যাবে বর্বরগুলো কোনও বর্বরের ছত্রছায়ায় আছে।’’
মানসুরুল হক মনে করেন, ‘‘রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থাই এর জন্য দায়ী। তদন্ত কমিটি গঠন করা, অপরাধীর জবানবন্দি গ্রহণ করা, আদালত কর্তৃক দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউর সুযোগ দেওয়া ইত্যাদির কিসের প্রয়োজন? এরকম খুনীকে জনসম্মুখে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হোক। এটাই তাদের যথোপযুক্ত শাস্তি।’’
বিচারের দাবি জানিয়ে আলমগীর আহাম্মেদ লিখেছেন, ‘‘একজন সশস্ত্র জনগণের নিরাপত্তাদানকারী কিভাবে জনগণের বুকেই গুলি চালায়! আমি হতবাক্!বাংলাদেশের প্রশাসনের লোকগুলো (পুলিশ)কি মানসিক ভাবে অসুস্থ না কি অন্য কিছু।ভালভাবে তদন্ত হোক এবং বিচার হোক সঠিক সময়ে।’’
(দৈনিক ইনকিলাবের সৌজন্যে)