শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৫:৩১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ ::
ঈশ্বরদীতে বাংলাদেশ ৭১ নামে অত্যাধুনিক হাসপাতাল উদ্বোধন জাতীয় প্রতিযোগিতায় ঈশ্বরদী কারাতে দলের সাফল্য অর্জন ঈশ্বরদীতে ১৩ দিনের শিশু সন্তানের মা’র রহস্যজনক মৃত্যু শাহজাদপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত–২ আহত ৬ টঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন ঈশ্বরদী পৌরসভায় সংবাদ সম্মেলনে কামরুজ্জামান সিরাজের মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ঈশ্বরদীতে সিরাজের সংবাদ সম্মেলন, পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ঈশ্বরদীতে শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগ, মামলা দায়ের লালপুরে ট্রাক্টর উল্টে চালক নিহত ঈশ্বরদীতে পুকুর খননের সময় পরিত্যক্ত গ্রেনেড উদ্ধার

কাল থেকে সিমীত বৃহস্পতিবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউন সারাদেশে

ডিডিপি নিউজ ২৪ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১

 

 

করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় আগামীকাল সোমবার থেকে সারাদেশে সীমিত পরিসরে লকডাউন দিয়েছে সরকার। আগামী বুধবার পর্যন্ত সব ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। তবে সাত দিনের জন্য সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে আগামী ১ জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে। গতকাল সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার গতরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কঠোর এই লকডাউনেও রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানাসহ শিল্পকারখানার পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালু থাকবে। তবে ব্যাংকের লেনদেনের সময়সীমা কী হবে, তা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যাংক খোলা থাকলে শেয়ারবাজারও চালু থাকবে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও পণ্য পরিবহন যথারীতি চলবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে গতরাতে অনলাইন মাধ্যমে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈঠকে অংশ নেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল সোমবার থেকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হলেও অর্থবছরের শেষ সময় হওয়ায় সিদ্ধান্তে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সোমবার থেকে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে। মার্কেট, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে লকডাউন শুরু হবে। এ সময় কিছু বিষয় খোলা থাকবে। আর ১ জুলাই থেকে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে।
বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এ প্রসঙ্গে বলেন, করোনার প্রথম থেকেই সুশৃঙ্খলভাবে পোশাক কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে। বিষয়টি বৈঠকে প্রশংসিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া লকডাউনেও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে পোশাক কারখানাসহ শিল্পকারখানা চালু থাকবে।
করোনা সংক্রমণ রোধে গত শুক্রবার রাতে সরকারের এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, ২৮ জুন সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। এ সময় জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। এ সময় সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের গাড়ি চলাচলও বন্ধ থাকবে। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসাসংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
সরকারের এই তথ্য বিবরণীর পর থেকেই কঠোর লকডাউনে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা চালু থাকবে কি না, সেটি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারাও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছিলেন না। তারা সরকারকে কারখানা খোলা রাখতে অনুরোধ করেন। সরকার কী নির্দেশনা দেয়, তার দিকে তাকিয়ে ছিলেন নেতারা। অবশ্য গত এপ্রিলের মাঝামাঝি শুরু হওয়া লকডাউনের মধ্যেও শিল্পকারখানা চালু ছিল।
গত শুক্রবার রাতে দেয়া সরকারের তথ্যবিবরণীতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সোমবার থেকে দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন জারি করেছে সরকার। এসময় জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব ধরনের সরকারি- বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। এছাড়া জরুরি পণ্যবাহী ব্যতীত যেকোনো ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এ সময়ে শুধু আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিসেবা ( যেমন- কৃষি উপকরণ সার, বীজ, কীটনাশক, কষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া, বিদ্যুৎ, গ্যাস/ জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (নদীবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি- বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিগুলো, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এবং পণ্যবাহী ট্রাক/লরি এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সব সিনিয়র সচিব এবং সচিবদের নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এর আগে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩৮তম সভা থেকে এই পরামর্শ দেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার কোভিড কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়, ভাইরাসের বিস্তার পুরোপুরো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগে সারা দেশ অন্তত ১৪ দিন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে শুধু জরুরি সেবাই এর আওতামুক্ত থাকবে। আর এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।
দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার এ বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা আরও আট দফা বাড়িয়ে দেয়া হয়। করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার সংক্রমণে দেশে এখনও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এরই মধ্যে কয়েকটি জেলায় লকডাউন দেয়া হলেও পরিস্থিতির উন্নতি তো হচ্ছে না বরং দিনকে দিন বেড়েই চলছে এর সংক্রমণ। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সারাদেশে ১৪ দিনের শাটডাউনের সুপারিশ কথা জানানো হয়। ২৩ জুন রাতে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩৮তম সভায় এ সুপারিশ করা হয়। সভায় দেশে কোভিড-১৯ এর সাম্প্রতিক ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও আলোচনা হয়। সুপারিশে বলা হয়, শাটডাউন চলা অবস্থায় জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেনো, সংক্রমণ এভাবে বাড়তে থাকলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাঅপ্রতুল হয়ে পড়বে।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সারাদেশে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ চলছে। চলতি বছর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা লকডাউন হলেও সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন‘ ঘোষণা দেয় সরকার। পরে সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ এবং ট্রেন চলাচল রোজার ঈদ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। পরে ২৪ মে থেকে গণপরিবহন চলার অনুমতি দেয়া হয়। একই সঙ্গে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো আসন সংখ্যার অর্ধেক বসিয়ে খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সারাদেশে বিধিনিষেধ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৬ জুন বিধিনিষেধ এক মাস বাড়িয়েছে সরকার, যা ১৫ জুলাই পর্যন্ত চলবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright 2020 © All Right Reserved By DDP News24.Com

Developed By Sam IT BD

themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!