পাবনা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার প্রত্যাহারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান।
পাবনা জেলা প্রতিনিধি।।
পাবনা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার মারুফা মঞ্জুরী খানের দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগে নাটোরে বদলীর আদেশ হলেও তিনি তদবিরের মাধ্যমে পাবনার অতিরিক্তি দায়িত্ব পালনের অফিসিয়াল আদেশ করায় সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। পাবনার বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন দুর্নীতিবাজ কালচারার অফিসারের এ আদেশ বাতিলের দাবিতে বুধবার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক উপদেষ্ঠা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
স্মারককলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে বদলী কৃত কালচারাল অফিসার পাবনার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নানা বিভেদ সৃষ্টিসহ ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়ম করে প্রতিষ্ঠানটি ধংসের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। ফ্যাসিষ্ট পতিত সরকারের পাবনা জেলা কমিটির উপদেষ্টা সাংবাদিক আব্দুল মতীন খানের কন্যা হওয়ায় পিতার প্রভাবে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে তিনি দীর্ঘ এক দশক নিজ জেলায় কমরত থেকে আইন কানুন না মেনে নিজে লাভবান হতে ব্যাপক স্বেচ্ছাচারের আশ্রয় নেন।
এ ব্যাপারে অনুসন্ধানে জানা যায় জেলা কালচারাল কর্মকর্তা মারুফা মঞ্জুরী খান হলেও তার পিতা জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্ঠা আব্দুল মতীন খান মুলত মেয়ের প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করতেন। তিনি প্রতিদিন বিকালে জেলা শিল্পকলা ভবনে মেয়ের কক্ষে গিয়ে ঘুম পাড়তেন।রাত ১০টার দিকে ঘুম ভাঙ্গার পর অফিস ত্যাগ করতেন।তিনি যে পর্যন্ত অফিসে থাকতেন সে পর্যন্ত অফিশিয়াল স্টাফদের অফিস খোলা রাখতে হতো। তিনি মেয়ের অফিসে বসে বিল ভাউচার তৈরি করে সরকারি টাকা লোপাটে মেয়েকে সহযোগিতা করেন। জেলা কালচারাল অফিসার দীর্ঘদিন ধরে ভুঁইফোড় সংগঠনের নামে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের অনুদান দিলেও প্রকৃত সাংস্কৃতিক সংগঠনকে বাদ দিয়েছেন এ নিয়ে প্রতিবাদ করেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।জেলা শিল্পকলা একাডেমির সরকারি অনুষ্ঠানে নিজের পছন্দের মুষ্টিমেয় ৫- ৬ টি সংগঠন ছাড়া অন্য কোন সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশ নেওয়ার সুযোগ তা দেওয়ার ও অভিযোগ রয়েছে।
শিল্পকলার কালচারাল অফিসারের অনিয়মে শিল্পকলা ও সাংস্কৃতিক চর্চায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিতে সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে দীর্ঘদিন অসন্তোষ বিরাজ করলেও প্রকাশ্যে কেও এর জোরালো প্রতিবাদ করতে পারেননি।গত ৫ তারিখে আওয়ামী সরকারের পতনের পর তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রকাশ্যে আসলে তাকে প্রথমে লালমনির হাট বদলি করা হয়। এরপর তদ্বির করে নাটোরে অর্ডার করা হয়। এরপর কালচারাল অফিসার নাটোরে ও যোগদান না করে শিল্প কলার প্রশিক্ষক ও কিছু অভিভাবকের সই নিয়ে নাটোরে যোগদানসহ পাবনাতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের অর্ডার করান। স্মারকলিপি প্রদানকারীরা কালচারাল কর্মকর্তার শিল্পকলা একাডেমীর পুরস্কার প্রদানসহ নানা দুর্নীতি অনিয়মের তদন্তসহ বিচারের দাবি জানিয়েছেন।তারা পাবনার সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সুষ্ঠ সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করার জন্য জেলা শিল্পকলা একাডেমির অবৈধ এডহক কমিটি বাতিল ও শিল্পকলা একাডেমির সদস্য ফর্ম জমা নেওয়া সাংস্কৃতিক কর্মীদের ফি জমা নিয়ে সদস্য পদ প্রদান এবং জেলা শিল্পকলার নির্বাচনের মাধ্যমে একটি বৈধ কমিটি গঠন করে গণতান্ত্রিক পন্থায় পরিচালনার করার পথ সুগম করার দাবি জানান।স্মারকলিপিতে উত্তরণ পাবনার প্রতিষ্ঠাতা আলমগীর কবীর হৃদয়,আরশিনগর বাউল শিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক, চমক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি রাকিবুল হাসান, মুক্তদৃষ্টি সাহিত্য সংসদের সভাপতি মো. শফিক আল কামাল, উচ্চারণ আবৃত্তি অনুশীলন কেন্দ্র পাবনার সভাপতি সৈয়দা জহুরা আকতার,তারুণ্যের আগ্রযাত্রার প্রতিষ্ঠাতা প্রধান সমন্নায়ক যুবায়ের, সুচিত্রা সেন চলচিত্র সংসদের যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ,লালন স্মৃতি পরিষদ সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম মনি, থিয়েটার ৭৭ সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম,পাবনা জেলা ফকির সাধু বাউল শিল্পীর সভাপতি ফকির শাহা আবুল হাসান.লালন একাডেমি সৃষ্টি বাউল দল সভাপতি মিননুছ খা।