স্টাফ রিপোর্টার// ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইসাহক আলী মালিথার অন্যায়—অত্যাচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পৌরসভার পাতিলাখালি এলাকার কৃষক আলহাজ্ব কামরুজ্জামান সিরাজ। বুধবার (৮ মে) দুপুরে তার নিজ বসতবাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কামরুজ্জামান সিরাজ তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বহুরূপি রাজনৈতিক দখলবাজ, ভুমিদস্যু ইসাহাক আলী মালিথা ও তার প্রধান সহযোগী গোলবারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যায় ও অত্যাচার থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে এ এলাকার শান্তি প্রিয় মানুষের পক্ষে আমি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি । জাতির বিবেক সাংবাদিকবৃন্দ যদি আমার বক্তব্য এবং তথ্য প্রমান যাচাই করে সত্যতা পান তাহলে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপনারা কলম ধরবেন,আর আমি যদি কোন চালাকি চতুরতার আশ্রয় নিই,তাহলে আপনারা আমাকে যে শাস্তি দেবেন তা আমি মাথা পেতে নিব।
আজীবন আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক, কলেজ ছাত্রলীগ ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি। বর্তমানে পবিত্র হজ্ব পালন করার পর রাজনীতিতে অতটা সক্রিয় না থেকে নামাজ কালাম আদায় করে বাড়িতেই সময় কাটাই। আমি একজন সাধারণ কৃষক মানুষ। সরকারি—বেসরকারী কোন জায়গা জমির দখলদারিত্বের সাথে আমি জড়িত নই এবং কোনদিনই ছিলাম না। অথচ ঈশ^রদী পৌরসভার মেয়র ইসাহক মালিথা গংরা আমার বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি এই মিথ্যা সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সিরাজ বলেন, আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগ দখল করা সত্বেও ভুয়া মালিক সেজে রাজনৈতিক দখলবাজ ভূমিদস্যু নামে পরিচিত ইসাহক আলী মালিথা, আবুল কাশেম গোলবার, সজিব প্রাং, সেলিম প্রাং, দলিল উদ্দিন দুখু প্রাং, বেনুয়ারা বেগম, সোলেমান, ছাইদুল, আমিনুল, রুয়েল, রবিউল, রাকিবুল, সনি, রনি, আহসানসহ আরও অনেকে ঈশ্বরদী থানার পাতিলাখালী মৌজার আর এস খতিয়ান নং ৮৪ সহ ২৬টি খতিয়ান জাল করেছে। জালকৃত খতিয়ানের ডকুমেন্টের ফটোকপি পরিবেশন করলাম। প্রকৃত সত্য ধামাচাপার জন্য মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করিয়েছে। পাশ্ববর্তী আরও অনেকগুলো দাগে আমার ৩০ বছরের ক্রয়কৃত ভোগদখলীয় ফসলি জমি জবরদখল করে ইসাহক মালিথা গং পৌরসভার ক্ষমতাবলে অবৈধভাবে সার্ভেয়ার ও কমিশনার দ্বারা উক্ত নালিশী ভূমি পরিমাপ পূর্বক পাকা ঘর—বাড়ি স্থাপন করার কাজ শুরু করে।
আমরা নিরীহ দূর্বল, কৃষিজীবী মানুষ। আমরা উচ্চ ফলনশীল ইরি—বোরো ধান, অগভীর নলকূপ স্কীমের মাধ্যমে চাষাবাদ করি। এছাড়াও ডাল, তেল, আখ, কলা, মাছ, গরুর দুধ, ফলজ বাগান, কাঠ বাগান প্রভৃতি উৎপাদন করে জাতীয় উৎপাদনের সাথে প্লাস করি। শতভাগ গ্যারান্টি, আমরা কোন অন্যায় অবৈধ কেন কাজের সাথে জড়িত নই। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং শেষ ভরসা পৌর আদালত, ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও পাবনা জজ আদালতের দ্বারস্থ হই। আদালত পি.বি.আই এর তদন্ত রিপোর্ট এবং ১৪৪ ধারার রায় ডিক্রি আমাদের পক্ষে প্রদান করেন, যার ডকুমেন্ট বিদ্যমান আছে। দশটি মামলা এখনও চলমান আছে বলে জানান তিনি। নতুন করে তারা সকল নালিশী জমিতে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা এবং পুলিশ প্রশাসনের লিখিত নির্দেশ অমান্য করে জোরপূর্বক ভাবে পাকা নির্মাণ কাজ শুরু করে। সিরাজ দাবী করেন, আমাদের সকল নালিশী জমির অনলাইন খাজনা এবং দলিল দস্তাবেজ রয়েছে। কিন্তু ইসাহক মালিথা ও গোলবার গং বিভিন্ন বিহারি ও হিন্দুদের ঘর—বাড়ি, সরকারি জমি, বাড়ি দখল করে, নিজেদের ঘর বাড়ি করেছে। চাঁদাবাজি, নারী ব্যবসা, মাদক ব্যাবসা ও জবর দখলকারী হিসেবে এই বাহিনী এলাকার বিভিন্ন জায়গা—জমি, মুলাডুলি থেকে আড়পাড়া, আড়কান্দিসহ ঈশ্বরদী শহর ও পৌর এলাকার সন্ত্রাসী চাঁদাবাজী এবং অরনকোলা গরু হাট, নাম মাত্র মূল্যে ডেকে নিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে। যার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার হওয়া একান্ত আবশ্যকীয়। পৌর মেয়র ইসাহক মালিথা, গোলবার, সোলেমা গং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকসহ নানা অনলাইন মিডিয়ার মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে আমাদের চরমভাবে সম্মানহানি করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি নিরপেক্ষ লেখনীর মাধ্যমে সাংবাদিকদের এলাকার শান্তিপ্রিয় নিরীহ কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর আহব্বান জানান।
এসময় ওয়াসিম খান, শাজাহান আলী, আকমল হোসেন, আসাদুজ্জামান, আকরামুজ্জামান খানসহ এলাকার আরও অনেক নারী ও পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে পৌর মেয়র ইসাহক আলী মালিথার সাথে কথা বললে তিনি সিরাজকে একজন বাটপার বলে মন্তব্য করে তার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন।