পাবনার ঈশ্বরদীতে ধানক্ষেত থেকে আটককৃত বিলুপ্ত প্রজাতির মেছোবাঘের গনপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) টিএম রাহসান কবির।
শুক্রবার ৫ এপ্রিল বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলার মুলাডুলির সরাইকান্দি এলাকা থেকে জনতার পিটুনিতে আহত মেছোবাঘটি উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে আনা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেছোবাঘটি মারা গেছে।
স্থানীয় কৃষক মহিদুল ইসলাম, চুন্নু মিঞা ও আলী হোসেন জানান, তারা সকাল থেকে সরাইকান্দি এলাকায় ধানক্ষেত পরিষ্কার করার কাজ করছিলেন। এসময় তারা গায়ে ডোরা ও ফোটাফোট কালো দাগের প্রাণীটি দেখতে পান। প্রথমে বিড়াল ভেবে ছেড়ে দেন। কিন্তু পরবর্তিতে সেটা বিড়াল নয় বুঝতে পারেন। তখন তারা চিৎকার করে লোকজন ডাকেন। এলাকাবাসী ছুটে এসে তাদের সহযোগিতায় মেছোবাঘটি আটক করা হয়। এরপর মেছোবাঘটিকে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ নাজমুল হোসাইন জানান, এটি মেছোবাঘ প্রজাতের মধ্যে নিন্মগোত্রের একটি জাত। অসুস্থ্ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণি সম্পদ হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু জনতা কর্তৃক আটক মেছোবাঘটিকে বেদম প্রহার করায় চিকিৎসা দিয়েও বাঘটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
ঈশ্বরদী বন কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল হোসেন জানান, থানা ও এলাকাবাসীর নিকট থেকে মেছোবাঘটি আটক করার খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) টিএম রাহসান কবিরের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। জনতা কর্তৃক আটককৃত মেছোবাঘটি উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণি সম্পদ হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) টিএম রাহসান কবির জানান, স্থানীয় জনগণ কাজটি ভাল করেনি। নিরীহ ও বিরল প্রজাতের প্রাণিকে আটক করে প্রহার করেছে। অসুস্থ্ অবস্থায় উদ্ধার করে বন কর্মকর্তার মাধ্যমে উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু মেছোবাঘটিকে আর বাঁচানো সম্ভব হলো না।
তিনি আরও জানান, যারা মেছোবাঘটি অহেতুক কারণে আটক করে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।