পাবনার ঈশ্বরদীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের কার্যালয় ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করলো ঐ ওয়ার্ডের আওয়ামিলীগের নেতারা।
মামলার এজাহার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, গতকাল বিকেল উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ভাড়ইমারী হাইস্কুল মাঠে স্থানীয় ছেলেরা ফুটবল খেলা নিয়ে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়, খবর পেয়ে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি হাশেম প্রাং এর ছেলের নেতৃত্বে জিআই পাইপ লোহার রড এবং লাঠি নিয়ে ৫/৬ জনের একদল সন্ত্রাসী মোটরসাইকেল যোগে এসে স্কুল মাঠের পাশে দাঁড়ানো রিজভী, রয়েল ও আসিবের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে বেদম পেটাচ্ছিল,তখন স্থানীয় পুরুষ ও মহিলারা এসে রিজভীদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী সদর হাসপাতালে প্রেরন করে । উল্লেখ্য আসিব ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, রিজভী সদস্য ও রয়েল ছাত্রলীগ কর্মী
প্রত্যক্ষদর্শী রিক্তা পরভিন জানায়, আমি প্রতিদিনের মতো রবিবারেও বিকেলে স্কুল মাঠে খেলা দেখতেছিলাম হটাৎ দেখি রয়েলের সাথে আরিফের ধাক্কা ধাক্কি শুরু হয়, পরে আরিফ দুইটা মটরসাইকেলে লাটিসুটা নিয়ে এসে রিজভী,আসিব ও রয়েলকে মারপিট শুরু করে।পরে উপস্থিত থাকা লোকজন তাদের থামিয়ে দেয় এবং আহতদের হাসপাতালে পাঠায়।
মিথিলা খাতুন জানায়, এখানে আওয়ামীলিগের দুইটিা গ্রুপ আছে,ছাত্রলীগের আয়োজনে কয়েকদিন আগে এই স্কুলমাঠে ফ্রি রক্তদান ক্যাম্পেইনের আয়োজন করে,সেখানে হাশেম প্রামানিকে দাওয়াত না করার কারণে তার ক্ষিপ্ত হয়ে থাকে। সেই রক্তদান ক্যাম্পেইন কমিটিতে রিজভী, আসিব, রয়েল থাকায় তারই জেরধরে আজকের এই হামলা ও মারপিট।
আহত রিজভী জানান, আমরা মাঠের পাশে দাঁড়ানো ছিলাম, হঠাৎ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আরিফ তার লোকজন নিয়ে এসে আমাদের মাইর শুরুকরলো। তিনি আক্ষেপ করে বলেন আজ ছাত্রলীগ করে বিনা দোষে মাইর, খেলাম,আবার বিএনপি বানিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙার মিথ্যা দোষও দেওয়া হলো।
এদিকে স্কুলে মাঠের মারপিটের ঘটনাকে পাল্টে দিতে ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের উপর দায় চাপাতে, আরিফ ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ অফিস ভাংচুর করে ছাত্রলীগকে বিএনপি বানিয়ে তার দোষ দিচ্ছে বলে জানায় স্থানীয় মামুন হোসেন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা । তারা আরো জানায়, ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি হাসেম প্রামানিকের নির্দেশে তার ছেলে আরিফ সবার প্রথমে আওয়ামীলিগ অফিসের চেয়ার ভাঙা শুরু করে, পরে ওয়ার্ড আওয়ামীলিগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলম প্রাং আওয়ামীলিগ অফিসে থাকা বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি নিচে নামিয়ে এনে বঙ্গ ছবি ভেঙে খন্ডখন্ড করে ফেলে।
এ বিষয়ে জানতে মুঠো ফোনে ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিন্নাহ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগ্রত সকালকে জানান, আমি মোড়ে সন্ধা হতে ছিলাম, প্রতিপক্ষ এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটিয়েছে তা দেখিনি এবং মন্তব্য করবো না। ওয়ার্ড যুবলীগের সাঃসম্পাদক নাছির জানান,আমার ব্যাবসায়িক অফিস পাশেই, বিকেল হতে রাত পর্যন্ত আমরা সেখানে ছিলাম,এখন নিজেরা ভেঙে ছাত্রলীগকে বিএনপি বানিয়ে দ্বায় চাপালে কি আর করার আছে,এর বেশি কিছু বলতে পারবো না।
অভিযুক্ত ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি হাশেম প্রামানিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার অফিস ভাংচুর হয়েছে,আমি থানায় মামলা দিয়েছি তারাই সব ব্যবস্থা নিবে। কে বা কারা কি কারণে করছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, আমি এখন নামাজে যাবো, পরে কথা বলবো।
এ ঘটনায় আহত রিজভী বাদী হয়ে গতকাল থানায় একটি এজহার দায়ের করেছেন।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সোহেল জানান খবর পেয়ে রাতেই ওসি স্যার সহ আমরা সেখানে যায়, দুটি ঘটনার বিস্তারিত জানতে। সত্যমিথ্যা অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। তবে উভয় পক্ষ থানায় লিখিত এজহার দিয়েছেন, এখন পর্যন্ত মামলা রুজু হয়নি।