ঢাকা অফিস।।
করোনা পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। অনেক কারখানায় ছাঁটাই হচ্ছে, অনেকেই ভুগছেন ছাঁটাই আতঙ্কে। সরকার এই খাতে মালিকদের প্রণোদনাও দিয়েছে। তবে থেমে নেই ছাঁটাই। পোশাক খাতের চাকরি হারানো শ্রমিকদের জন্য প্রণোদনার ঘোষণা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবিসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন। পোষাক শিল্পে উৎপাদনের চাকা সচল রাখতে শ্রমিকদের মানবেতর জীবন থেকে রক্ষায় দাবী বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ৬ দফা দাবি ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন পোষাক শ্রমিক সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। ছয় দফা দাবিগুলো হলো- চাকরি হারানো শ্রমিকদের বেঁচে থাকার যুদ্ধকে সহজ করতে প্রণোদনা ঘোষণা দেয়া, প্রণোদনার অর্থে চাকুরীচ্যুত শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থান, উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশ অটোমেশনে প্রবেশ করেছে তাই শ্রমিকদের অটোমেশনের জন্য পর্যাপ্ত ট্রেনিং ব্যবস্থা করা। চাকুরির সুরক্ষা প্রদান করা। করোনায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান অব্যাহত এবং নিশ্চিত করা। প্রণোদনা গ্রহণ করে কারখানা বন্ধ করা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানী খান বলেন, করোনার এই সময়ে পোশাক শ্রমিকরা অন্যায়ভাবে ছাঁটাইয়ের শিকার হচ্ছেন। আবার কারখানা বন্ধ হওয়ার প্রেক্ষিতে বেকার হচ্ছেন। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্ট্যাডিজ (বিলস্) এর তথ্য উদ্বৃত করে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৩ লাখ ২৪ হাজার ৬৮৪ জন শ্রমিক কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছেন। মানবেতর জীবন যাপন করছেন শ্রমিকরা। অন্যন্য শ্রমিকদের কাজ হারানোর শঙ্কায় দিন কাটছে। অভিযোগ করে রানী খান বলেন, করোনাকে পুঁজি করে অনেক মালিকরা কারখানা বন্ধ ও খোলা রাখার নাটক করছে। এতে অনিশ্চয়তা বেড়ে যাচ্ছে শ্রমিকদের। তিনি বলেন, শ্রমিকবান্ধব বর্তমান সরকার সর্বপ্রথম এই শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিলেও প্রধানমন্ত্রী চাননি একটি শ্রমিকও ছাঁটাই হোক। কিন্তু আমরা দেখেছি মালিকরা প্রণোদনা গ্রহণ করেও শ্রমিক ছাঁটাই করেছেন। এমনকি সরকারের নির্দেশ অমান্য করে বিজিএমই সভাপতি ঘোষণা দিয়ে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু করেন যা দুঃক্ষজনক।
লিখিত বক্তব্যে বলেন,একদিকে চলমান কারখানা বন্ধ হচ্ছে আবার নতুন কারখানা স্থাপনও হচ্ছে। মহামারির কারণে দেশের ৮০ ভাগ রপ্তানি আয়কারী পোষাক খাত মালিকরা যদি প্রণোদনা পায় তাহলে দেশের অর্থনীতি সচলকারী এই খাতের শ্রমিকরা কেন চাকরি হারিয়ে প্রণোদনা পাবে না? ৮০ ভাগ রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে শ্রমিকরাইতো মূল ভূমিকা রাখছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন সহসভাপতি মো. লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- যুগ্ম সম্পাদক মো: সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ শিকদার, ঢাকা উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আছমা
আক্তার, কেন্দ্রীয় সদস্য জিয়াউল হক জিয়া, সুরাইয়া আক্তার সুখসহ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।