ঃআমাদের বন্ধু এসএম রাজা ঃ
হয়তো বা প্রাচীন জ্ঞানী গুণীদের মতো একই সঙ্গে সাহিত্য, দর্শন ও বিজ্ঞানের পাণ্ডিত্য লাভের মতো বহুমাত্রিক প্রতিভার তুলনীয় তিনি নন কিংবা নন কোন মহাকাব্যের রচয়িতা বা নবারুণ ভট্টাচার্যের মত করতে পারেননি ” এ মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয়” এমন সাহসী উচ্চারণ, তবে অকপটে বলে গেছেন ” যাবার ভয় নাই – প্রস্তুত সবসময়”। সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে ওঠার যে কাব্যিক চিত্রনাট্য এঁকেছেন তার জীবনের ক্যানভাসে তা এককথায় অতুলনীয়।তিনি একাধারে কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার,গীতিকার, সুরকার, শিল্পী এবং সাংবাদিক। সব পরিচয় ছাপিয়ে তিনি একজন মরমি সাধক হিসেবে গুরুজী বলেই বেশি পরিচিত।ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে সততা আর স্বচ্ছতাই তার জীবনসংগ্রামের হাতিয়ার। তার ছয়টি কাব্যে গ্রন্থের মধ্যে সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘অদ্ভুত প্রেম’ এবং ‘যদি কখনও’ যখন আমার মতো অপাংক্তেয়র হাতে তুলে দিলেন – সত্যি বলতে কি আমি আবেগে আপ্লূত হয়ে গেলাম।
তার কবিতার রাজ্য দিগন্ত বিস্তৃত।বৃহৎ থেকে সূক্ষ্মতম ভাব সকল কবিতার মধ্যে প্রস্ফুটিত হয়েছে।অন্যান্য কবির কবিতায় কেবল বাগানের বনেদি ফুলই স্থান পেয়েছে আর কোন ফুলকে যেন কেউ কবিতার উপযুক্ত বলেই মনে করেন নাই;কিন্তু তার কবিতায় অতি ক্ষুদ্রকায়-সাধারণের দৃষ্টির অগোচর, সামান্য ঘাসের মধ্যে প্রস্ফুটিত বনফুলটিও ফুটে উঠেছে।
জীবন দর্শনে তার অনুভূতি অনন্য। যেমন যদি কখনও কবিতায় তিনি বলছেন –
” যদি কখনও আমি হারিয়ে যাই…..
আমাকে খুঁজো না অভিজাত অট্টালিকায়,
খুঁজো দুখিনী মায়ের নয়নের জলে….
নিরন্ন মানুষের ঘরে।
খুঁজো বাউলের একতারায়,
সবুজ ফসলের মাঠে…. ”
তাঁর গানে ধ্বনিত হয়েছে মানুষের অহমিকা আর আত্মম্ভরিতার সারশূন্যতা। গেয়েছেন মাটির ভাষা আর মেঠো সুরে ” ও মানুষ কিসির এতো ফুটিনি..”
সোজাসাপ্টা এই মানুষটি আমাদের বন্ধু ‘৭৬ এর অলংকার এস,এম, রাজা। তার জন্য শুভকামনা।