বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও নিবন্ধন ছাড়া আপাতত কাউকে করোনার টিকা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে মোতাবেক আগামী শনিবার শুরু হচ্ছে করোনার বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি।
ওইদিন সারা দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি কেন্দ্রে ৬০০ জনকে টিকা দেয়া হবে। এরপর ৭ দিন এই কর্মসূচি বন্ধ থাকবে। ১৪ আগস্ট থেকে পুরো কর্মসূচি আবার শুরু হবে। শনিবার শুধু বয়স্ক, অগ্রাধিকার পাওয়া প্রতিবন্ধী ও অসুস্থদের টিকা দেয়া হবে।
বুধবার রাত ১১টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে এখন যেভাবে টিকা দেয়া চলছে তা একইভাবে চলতে থাকবে। এই পরিবর্তন শুধু বিশেষ সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির জন্য প্রযোজ্য হবে।
এই কর্মসূচির আওতায় সিটি করপোরেশনের বাইরে প্রথম দফায় প্রতিটি কেন্দ্রে ৬০০ জন করে মোট ১৪ হাজার কেন্দ্রে ৮৪ লাখ এবং সিটি করপোরেশনের নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আলাদাভাবে আরো ১৬ লাখ টিকা দেয়া হবে। এর জন্য প্রথম দফায় প্রতিটি ইউনিয়নের তিনটি কেন্দ্র বাছাই করা হয়েছে। এদিকে শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও শনিবারের পর আগামী ১৪ আগস্ট থেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী টিকাদান কর্মসূচি ফের চলতে থাকবে। এরই মধ্যে নির্দিষ্ট এলাকায় টিকা পাঠানো শুরু হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় পৌঁছে গেছে টিকা।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের আহ্বানে এই কর্মসূচির চূড়ান্ত প্রস্তুতি সভা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে শুরু করে সারা দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারাও অংশ নেন। ওই সভায় টিকাদানের বিশেষ কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয় এবং যাতে কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয় সে ব্যাপারে নানা ধরনের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ সময় যার যার এলাকার প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম গতকাল গণমাধ্যমকে জানান, আপাতত বিশৃঙ্খলা এড়াতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিবন্ধন ছাড়া কাউকেই টিকা দেয়া যাবে না। যাঁরা নিজেরা নিবন্ধন করতে পারবেন না, তাঁদের নিবন্ধন করতে সহায়তা করবেন স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা। এমনকি যাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাঁরা দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে জাতীয় পরিচয়পত্র করতে পারেন, সে জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র কর্তৃপক্ষকে এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে (মহানগরের বাইরের) টিকার পরিকল্পনার বিষয়ে ঢাকার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘আমাদের দেয়া নির্দেশনা অনুসারে সাত দিনব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি ঠিক করা হলেও বাস্তবে টিকা দেয়া হবে তিন দিন। ওই সাত দিনের মধ্যে শুক্রবার টিকা দেয়া হবে না, আর বাকি তিন দিন অন্যান্য রোগের নিয়মিত টিকাদান চলবে।