বিতর্কিত চিত্রনায়িকা পরীমনির করা ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিনের পর পাল্টা মামলা করবেন বলে জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ। এদিকে আজ পরীমনি আটকে পর আবারও এই নায়িকার বিরুদ্ধে মামলার ঘোষণা দিলেন নাসির। বুধবার নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, মিথ্যা অপবাদ, সম্মানহানি করা, পারিবারিকভাবে অপদস্থ করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে যে কোনো সময় তিনি রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় পরীমনির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন।
নাসির ইউ মাহমুদ আরও জানান, মামলা করার জন্য প্রস্তুত আমি। আজ করবো কিনা বা কখন করবো কিভাবে করবো আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা দায়ের করবো। আপনারা জানেন আমার সম্পর্কে যে ধরনের অভিযোগ করেছেন সবই মিথ্যা, পারিবারিকভাবে আমাকে হয়রানি করা হয়েছে। মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগের কারণে আমার দীর্ঘদিনের অর্জিত মান-সম্মান সবকিছুই মিশে গেছে।
এরআগে বিকেল থেকে পরীমনির বাসার সামনে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে ভেতরে ঢোকে তারা। পরে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। এক পর্যায়ে তাকে আটক করা হয়।
র্যাবের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরীমনির বাসায় তল্লাশি চালিয়ে কিছু মাদক দ্রব্য ও মদ পাওয়া গেছে।
র্যাব ও পুলিশের সদ্যরা যখন পরীমনির বাসার সামনে অবস্থান নেন তখন এ ঘটনা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে আসেন তিনি।
লাইভে পরীমনি বলেন, ‘শুরু থেকেই আমাকে মেরে ফেলার ভয় পাচ্ছি। আমাকে কেউ মারতে চান। কেউ এসে পুলিশের পরিচয় দিয়ে এসে যদি আমাকে খুন করতে আসেন তাহলে আমি কি করবো। তদন্ত করতে এলে আমাকে পরিচয় দিক। তাহলে আমাকে পরিচয় দিতে হবে। যদি সত্যি পুলিশ হয় তাহলে আমি অবশ্যই দরোজা খুলবো।’
তিনি বলেন, আমার বাসার গেটে এসে তারা দরোজা ধাক্কাচ্ছে। পরিচয় জানতে চাইলে তারা বলছেন, তারা পুলিশ। আমি ডিবি অফিসে ফোন করেছি, বনানী থানায় ফোন করেছি। ওসি হারুণ ভাইকে ফোন করলে তিনি বলেন, আমাদের এখান থেকে কেউ যায়নি। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ যেতে পারেন। দরোজা খুলতে পারো। আমি বলেছি আপনি কনফার্ম না করলে আমি দরোজা খুলবো না।
প্রসঙ্গত, গত ৯ জুন মধ্যরাতে সাভারে অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাবে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। ঘটনার চার দিন পর ১৩ জুন রাত ৮টার দিকে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এবং রাত ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনা প্রকাশ করেন নায়িকা পরীমনি। পর দিন ১৪ জুন সকালে ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন তিনি।ওই দিন বিকালে উত্তরা থেকে নাসির ও অমিসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। এর পর ডিবির গুলশান জোনাল টিমের উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সিকদার বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।
ওই মামলায় গত ১৫ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি নাসির ও অমির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ওই মামলায় রিমান্ড শেষে পরীমনির মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তাদের। ২৯ জুন পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় প্রধান আসামি নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমি জামিন পান। পরে ৩০ জুন দিবাগত রাত ৮টার দিকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নাসির মুক্তি পান।