এস এম রাজা ।। ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে ঈশ্বরদীর গুরুত্ব সব সময়ই অপরিসীম। বিশেষ করে পদ্মাবিধৌত জনপদ ঈশ্বরদী উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় এর গুরুত্ব আরও বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক আগে থেকেই। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ইপিজেড ও বিভিন্ন ধরনের বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কারণে ঈশ্বরদীর গুরুত্ব এখন সর্বাধিক পর্যায়ে পৌঁছেছে বললে ভুল হবে না। ব্যবসা বাণিজ্য চাকরী বাকরি ও দাপ্তরিক কাজে এখানে যেমন দুই বঙ্গের মানুষের নানা প্রকার বাহনে আসা যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। তেমনই তুলনামূলক স্বাস্থ্যগত জননিরাপত্তার হুমকিও দিন দিন ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলমান বৈশ্বিক মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে অধ্যাবধি ঈশ্বরদীতে করোনার আঘাত উল্লেখযোগ্যহারে দৃশ্যমান না হলেও ঝুঁকির দিক থেকে বরাবরই ভীতিকর রয়েছে। আর এই ভীতির পরিমান মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে ঈশ্বরদীর নিকটবর্তী জেলা শহরগুলোর বর্তমান করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে। দেশের ভিতরে বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাসমূহে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট প্রবেশ করায় এই অঞ্চলসমূহ পুরোটাই করোনার ঝুঁকি ভীষণভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী, কুষ্টিয়া, নাটোর, পাবনা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙা, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সহ উত্তর এবং দক্ষিণের সীমান্তবর্তী প্রায় জেলাতেই করোনার নয়া প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে আশঙ্কাজনক হারে। আতঙ্কিত করে তুলেছে জন সাধারণকে। করোনায় আক্রান্ত এলাকাসমূহ থেকে প্রতিদিন চাকুরী ব্যবসা ভ্রমণসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে শত শত লোক ঈশ্বরদীতে আসা যাওয়া করছে। আগত এইসব লোকজনদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে শতভাগ এতে সন্দেহ করার কোন অবকাশ নেই। বর্তমানে সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া বিশেষ করে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজশাহী জোনকে করোনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সমস্ত হটস্পট এলাকা থেকে আগত লোকজনের দ্বারা করোনা ভাইরাস ঈশ্বরদীতে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ার যৌক্তিকতা এড়িয়ে যাওয়া যায় না। বর্তমানে ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার এবং রূপপুর পারমানবিক, ইপিজেড সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরীজীবিদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল না করার কারণে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। প্রশাসন ও মিডিয়াসহ বিভিন্ন বেসরকারি মাধ্যমে করোনার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করার প্রয়াস অব্যাহত থাকলেও অভাব অনটন, আর্থিক দৈন্যতা ইত্যাদির অজুহাতে এখানে অবস্থানকারী প্রায় শতকরা ৯৯ % লোক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করছে না। যে কারণে ব্যাপকহারে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার আশংঙ্কা করছেন অভিজ্ঞ মহল। অভিজ্ঞ মহলের মতে স্রষ্টা যদি সহায় না হন তাহলে হয়তো আগামীতে ঈশ্বরদীও করোনা আক্রন্তের দিক থেকে হটস্পট হতে পারে। সুতরাং, সময় থাকতেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও সতর্কাবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।