তথ্য আদান-প্রদানে মোবাইল ফোন বদলে দিয়েছে শহর ও গ্রামের মানুষের জীবন। পৃথিবীতে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে মোবাইল কার্যত বিপ্লব ঘটিয়েছে। এই ডিভাইস কয়েক সেকেন্ডেই পৃথিবীর এক প্রান্তের খবর অন্যপ্রান্তে পৌঁছে দেয়। বিজ্ঞানের বদৌলতে বলতে গেলে মোবাইল মানুষের যাপিত জীবনের অতিপ্রয়োজনীয় একটি অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু অতিপ্রয়োজনীয় মোবাইলের অপব্যবহার দেশের নতুন প্রজন্মকে যেন ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আগে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডে ছাত্রছাত্রী, তরুণ-তরুণীদের মেধার বিকাশ ঘটত। এখন লাখ লাখ কম বয়সী ছেলেমেয়ের দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে মোবাইলে গেইম খেলে। হাট-মাঠ-ঘাট, রাস্তার মোড়, গলিপথ এমনকি বাসা-বাড়িতেও দেখা যায় নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, গেইম খেলেন। ছেলেমেয়েরা মোবাইলে আসক্ত হওয়ায় পারিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাতে সম্পর্ক গড়ে উঠা, এমনকি সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে পরস্পরের দেখা-সাক্ষাৎ কমে গেছে। সামাজিক বন্ধন আলগা হচ্ছেÑ মোবাইল গেইমে সময় কাটানোয়। বৈশ্বিক মহামারি করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৫ মাস ধরে বন্ধ থাকায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসাপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের মোবাইলে সময় কাটানো আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা মোবাইলে আসক্ত যে ছেলেমেয়েরা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠছে; আগামীতে দেশ গড়তে তাদের মস্তিষ্ক কি স্বাভাবিকভাবে কাজ করবে? তাদের মতে, মোবাইল ব্যবহার করে টিকটক বানিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়া, গেইম নেশায় আশক্ত হচ্ছে নতুন প্রজন্ম। এখন এর প্রভাব বোঝা না গেলেও কয়েক বছর পর নেতিবাচক প্রভাব প্রকট হয়ে ধরা দেবে।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপারসন প্রফেসর ড. আবুল মনসুর বলেন, যতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলে ততদিন পিতা-মাতাকে ভূমিকা রাখতে হবে। সন্তানদের সময় দিতে হবে। সন্তানদের পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলতে হবে। সর্বোপরি সন্তান যাতে মোবাইল ডিভাইসে আসক্ত হয়ে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ইফেক্টিভ প্যারেন্টিং খুবই জরুরি। তিনি বলেন, করোনার শুরুর দিকে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম ও টিভিতে যেভাবে অনলাইনে ক্লাস হতো এখন তা অনেকটাই কমে গেছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সাথে সম্পৃক্ততা কমে গেছে। এটা কেন বন্ধ হলো বা কমে গেল, সেদিকেও নজর দেয়া দরকার। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মনোরোগ চিকিৎসক আহমেদ হেলাল বলেন, মোবাইলে ইন্টারনেট গেম আসক্তি অন্যান্য নেশাজাত দ্রব্য ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা, মদ ইত্যাদি আসক্তির মতোই। পার্থক্য হচ্ছেÑ এটি আচরণগত আসক্তি, আর অন্যান্য নেশাজাত দ্রব্যের আসক্তি, রাসায়নিক আসক্তি। মস্তিষ্কের যে অংশে (রিওয়ার্ড সেন্টার) ইয়াবা বা গাঁজার মতো বস্তুর প্রতি আসক্তি জন্ম নেয়, ঠিক সেই অংশেই কিন্তু ইন্টারনেট বা গেমের প্রতি আসক্তি জন্মায়। তাই একে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। এটা থেকে সন্তানদের দূরে রাখতে পরিবারকে সতর্ক হতে হবে।
মোবাইলের বদৌলতে করোনায় বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাস নেয়া হচ্ছে। এতে কিছু সুবিধা হচ্ছে। মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ই-বই পড়ে জ্ঞানার্জন করছে। এ ছাড়াও অবাধ তথ্যপ্রবাহ, মোবাইলের ব্যবহারসহ প্রযুক্তির কল্যাণে দেশে মানুষের যাপিত জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে; অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে, অনেকেই আয় রোজগার করছেন, পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে। মোবাইলে তথ্য ভান্ডার বিখ্যাত বইয়ের ই-বুক দিয়ে ই-বুক লাইব্রেরী গড়ে তোলা যায়। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ঘরে বসে বাজার ও কেনাকাটায় মোবাইল ব্যবহার হচ্ছে। এই সুবিধাগুলোর বিপরীতে নতুন প্রজন্মের মোবাইলের মাধ্যমে প্রযুক্তির অপব্যবহার পুরো জাতিকে ভাবিয়ে তুলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কয়েকটি আত্মহত্যা ও অপরাধ ঘটনা মোবাইল ব্যবহারে প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। কয়েক বছর আগেও তরুণদের অপরাধের সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দটি ছিলÑ ‘ইভটিজিং’। এখন আলোচিত শব্দ ‘টিকটক’। মোবাইলে টিকটকের কারণে কিছু তরুণ অপরাধপ্রবণতায় ঝুঁকে পড়েছেন। সম্প্রতি কম বয়সী মেয়েদের ভারতে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেয়ার যে চিত্র মিডিয়ায় উঠে এসেছে, তা ওই মোবাইলে প্রযুক্তির অপব্যবহার টিকটক ভিডিওর কারণেই। ইদানীং পত্রিকার পাতা খুললেই নজরে পড়ে মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও চিত্রের খবর, আত্মহত্যা বাড়ছে। এখন মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ। এটা প্রযুক্তি সন্ত্রাস না মোবাইল অপব্যবহারের সন্ত্রাস? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা আক্রান্ত হচ্ছে। অপমান, অপবাদ, লজ্জা থেকে পরিত্রাণ পেতে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন অনেক তরুণী। শুধু এখানেই নয়, দেশের প্রতিটি জেলায় গড়ে ওঠা সাইবার ক্যাফেগুলোর প্রযুক্তির অপব্যবহার প্রশ্নের সম্মুখীন। স্কুল-কলেজ-মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সাইবার ক্যাফেতে গেম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কলেজপড়ুয়ারা অশ্লীল সাইটগুলো ঘাঁটাঘাঁটি করে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। দেশে এমনিতেই অসামাজিক কর্মকাণ্ড যে ঘটে না তা নয়। তবে মোবাইলের অপব্যবহারে ইদানিং বেশি ঘটছে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেমন পুরো বিশ্বকে সামনে আনা যায়, জ্ঞান অর্জন করা যায়, তেমনি ব্যবহারকারীদের বিপথগামী করে। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এক গবেষণায় বলা হয়েছেÑ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ১৫ মাসে অন্তত ১৫১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে ৭৩ জন স্কুল শিক্ষার্থী, ৪২ জন বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী, ২৭ জন কলেজ শিক্ষার্থী ও ২৯ জন মাদরাসার শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের বেশিরভাগের বয়স ১২ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।
গত বছরের ১৮ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর থেকে গত ৪ জুন পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কম বয়সি ছাত্রছাত্রীরা মোবাইলে আশক্ত হয়ে পড়েছেন। দিন নেই, রাত নেই, সব সময় মোবাইলে পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেইম খেলছে। এমনকি খেতে না চাইলে মা-বাবা বাচ্চাদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিয়ে খাওয়ান। বোঝার আগেই এভাবে শিশুরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েন মোবাইল ফোনে। শিক্ষিত অথচ অচেতন অনেক অভিভাবককে গর্ব করে বলতে শোনা যায়, আমার ছেলে-মেয়ে এই বয়সেই ‘মোবাইল বিশারদ’। ফোন সেটের কোন ফোল্ডারে কী আছে; কোথায় কোন যন্ত্রাংশ, গেম সবই তার মুখস্থ। শিশুরা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। ছোট শিশু এবং প্রাইমারি স্কুলপড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের অ্যাপ, গেম, ভিডিও, চ্যাটিং নেশায় পরিণত হয়েছে। ইন্টারনেটের ভেতরে আছে জ্ঞানের মহাসমুদ্র। বিজ্ঞানের বদৌলতে গুগলে গেলে ভালো-মন্দ সব তথ্যই পাবেন। প্রশ্ন হলোÑ মোবাইল ব্যবহার করে আমাদের ছেলেমেয়ে কী সেই জ্ঞানার্জনে সে তথ্যই ভালোটা নিচ্ছে? নাকি মোবাইল-ইন্টারনেটের অপব্যবহারে নেশার রাজ্যে ডুবে যাচ্ছে?
মনোচিকিৎসক ও গবেষকরা বলছেন, করোনাকালে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবনের ওপর মানসিক চাপ বাড়ছে। পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশা, পরিবারের শাসন ইত্যাদি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে মোবাইলে গেইম খেলছে। এটা এক সময় নেশায় পরিণত হয়ে যাচ্ছে। মোবাইলে গেইম খেলা মদ, গাজ, হিরোইন খাওয়া নেশার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। নেশায় পড়লে সেখান থেকে সরে আসা কঠিন। অনেকেই প্রেমঘটিত টানাপড়েন, আর্থিক সংকট, বিষণ্নতা ও একাকিত্বসহ ছোট ছোট সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য মোবাইল গেইমে আশক্ত হচ্ছেন। অনেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে তুচ্ছ ঘটনায়ও আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করছে না। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে শিক্ষার্থীদের এই আসক্তি কিছুটা হলেও কমে যাবে। ক্লাসের কাজের চাপ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দিনের অনেক সময় কাটাতে হবে। আবার বাসায় স্কুলের ক্লাসের পড়া তথা হোমওয়ার্ক করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকার প্রবণতা কমে যাবে।
জানতে চাইলে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল ওয়াহাব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা ঘরে বন্দি, খেলাধুলা ও বন্ধু-বান্ধবের সান্নিধ্য তারা পাচ্ছে না। সে কারণে অনেকেই মোবাইলে গেইম খেলার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। করোনাকালে অনেক অভিভাবকের চাকরি চলে গেছে, আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে, তৈরি হয়েছে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা। এ জন্য হতাশা ও বিষণ্নতা থেকে কেউ কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। আর মোবাইলের বদৌলতে ইন্টারনেটে গেলে অনেক কিছু দেখা যায়। ফলে যে যা করতে চায় তা সহজেই করতে পারেন।
বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বিশ্বায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহারে আমরা যেভাবে দৌড়াচ্ছি; এতে অদূর ভবিষ্যতে জাতি চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। ছুরি অতি প্রয়োজনীয় বস্তু। ছুরি নানা কাজে ব্যবহৃত হয়। ডাক্তার ছুরি রোগীর অপারেশনের কাজে ব্যবহার করেন; সেই ছুরি সন্ত্রাসী-ছিনতাইকারী খুনের কাজে ব্যবহার করেন। ছুরির দোষ নেই; সেটা কী কাজে ব্যবহার হচ্ছে সেটাই মুখ্য। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মোবাইলের প্রয়োজনীয়তা ও গুণাগুণ বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। কিন্তু আপনি কিভাবে ব্যবহার করছেন বা ওই সবের ভালোমন্দ কোনটা নিচ্ছেন, সেটাই মুখ্য। মোবাইল, ইন্টারনেটের লাগামহীন অপব্যবহার দেশের নতুন প্রজন্মের সর্বনাশ করছে। মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেটের ‘অতি’ ব্যবহারে শিশুরা অসামাজিক হয়ে উঠছে। শিশুদের কল্পনাশক্তি হ্রাস, পড়াশোনায় অমনোযোগী, চোখের সমস্যা, ঘুম কম, অতিরিক্ত ওজন ও আত্মকেন্দ্রিক হওয়ার জন্য দায়ী ওই মোবাইল।
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স নামের একটি সংস্থার সমীক্ষায় মোবাইলের অতি ব্যবহারের ভয়াবহ পরিণতির চিত্র তুলে ধরেছে। মোবাইল ব্যবহার ইস্যুতে গবেষণায় বলা হয়, মোবাইল-ইন্টারনেট শিশুদের কল্পনাশক্তি হারিয়ে ফেলছে। আগে ভূতের গল্প ও ঠাকুরমার ঝুলি/ব্যাঙ্গোমা ব্যাঙ্গোমি বইয়ে পড়ত। এখন ওই সব গল্প শিশুরা বইয়ের পাতায় পড়ে না। টিভিতে কার্টুন দেখাও কমে গেছে। এখন মোবাইলে ভিডিওতে দেখে থাকে। এতে শিশুদের বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বই পড়ে নিজেদের কল্পনাশক্তির সৃষ্টির প্রবণতায় ব্যাঘাত ঘটছে। শিশুরা যত বেশি মোবাইল/টিভির প্রতি অনুরক্ত হচ্ছে, ততবেশি কল্পনাশক্তি কমে যাচ্ছে; আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছে। মোবাইলে আসক্তির ফলে শিশুরা অসামাজিক হয়ে পড়ে। তাদের সব মনোযোগ থাকে মোবাইলের দিকে। অন্য কিছুই তার মাথায় থাকে না। সারাক্ষণ মোবাইল/টিভি নিয়ে মেতে থাকায় তাদের মনোজগৎ থেকে খেলার ইচ্ছা ক্রমশ হারিয়ে যায়; শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। ছোটবেলার মোবাইলে গেইম খেলার অভ্যাস ধীরে ধীরে নেশায় পরিণত হলে পরিস্থিতি ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
প্রফেসর ড. আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ধরন দুই রকমের। একটি অবধারণগত বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অন্যটি আচরণগত শিক্ষা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে বন্ধু-বান্ধব ছিল তাদের সঙ্গ থেকেও তারা দূরে। এমতবস্থায়, তারা নিঃসঙ্গতা কাটানোর জন্য মোবাইল ডিভাইসের দিকে ঝুঁকে সময় কাটাচ্ছে। এতে করে দিন দিন শিক্ষার্থীদের আসক্তি ক্রমে বাড়ছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে গেলে এ আসক্তি আস্তে আস্তে কমে যাবে। গোটা বিশ্ব এখন অতিমারি করোনার ছোবলে জর্জরিত। এ থেকে উত্তরণের পথ অনেকটা চ্যালেঞ্জিংও বটে। তারপরেও শিক্ষাব্যবস্থার সাথে যারা জড়িত আছেন, তাদের বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। কিভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়, সে ব্যাপারে সমন্বিত প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে।