‘যাবজ্জীবন সাজা’ অর্থ হচ্ছে ৩০ বছর কারাবাস। এই মর্মে পূর্ণাঙ্গ রায প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ। তবে ক্ষেত্র বিশেষে কোনো মামলার রায়ে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকলে যাবজ্জীবন সাজা ‘আমৃত্যু কারাদণ্ড’ বলে বিবেচিত হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ১২০ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশিত হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে গত বছরের ১ ডিসেম্বর ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড’ বলে এ সংক্রান্ত রিভিউ আবেদনের রায় দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। সেসময় আদালতে রিভিউ অবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। সরকারপক্ষে ছিলেন তৎকালিন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এছাড়া আদালতে এ মামলায় অ্যামিকাস কিউরি (আদালত সহায়ক আইনজীবী) হিসেবে মতামত দেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সাবেক এটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান ও আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন।
গত বছরের ১১ এপ্রিল ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড’ এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ শুনানিতে ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ হবে কি না সে বিষয়ে আইনি মতামত তুলে ধরতে চার সিনিয়র আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দেন আদালত।
প্রসঙ্গত: ২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় দুই আসামি আতাউর রহমান মৃধা ওরফে আতাউর ও আনোয়ার হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে। এসব আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টে সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আবেদন জানান। ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের দেয়া রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। একইসঙ্গে আদালত যাবজ্জীবন মানে ‘আমৃত্যু কারাবাস’সহ ৭ দফা অভিমত দেন। পরে আপিলের ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়।