রাজশাহী অফিস।।
করোনায় মৃত্যুর ঘটনা এখন প্রতিদিনকার। দিন যত যাচ্ছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাড়ছে মৃত্যুর ঘটনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাকে প্রথম পর্যায়ে গুত্ব না দিয়ে রোগীর অবস্থা যখন খারাপ হয়ে যাচ্ছে, তখন চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া অন্যতম কারণ। এ ছাড়া শেষ সময়ে যেসব রোগীর আইসিইউ দরকার হয় তারাও সময়মতো আইসিইউ পান না।
এখনকার একটি আইসিইউ বেড পাওয়ার জন্য সব সময়ই অপেক্ষায় থাকেন প্রায় ৭০ জন রোগী। এ কারণে আইসিইউর অপেক্ষা করতে করতেই মারা যাচ্ছেন অনেকেই। এ অবস্থায় অনেকেই মনে করেন সময়মতো আইসিইউ না পাওয়া মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণগুলোর মধ্যে একটি।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলেন, আমাদের এখানে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আছে। এটি মারাত্মক। এর ফলে মৃত্যু বেড়ে যায়। এ ছাড়া আমাদের অনেকেই আক্রান্ত হয়ে খারাপ অবস্থাতেও বাড়িতে থাকছেন। মনে করছেন ভালো হয়ে যাবেন। যখন তারা খুব খারাপ হয়ে যান, তখন হাসপাতালে আসছেন। তখন তাদের বাঁচানো যাচ্ছে না। দ্রুত ডাক্তারদের পরামর্শ না নিলে বা হাসপাতালে ভর্তি না হলে মৃত্যুর হার কমানো যাবে না। কেউ পজিটিভ হলে তার রক্ত, ফুসফুসসহ বেশ কিছু পরীক্ষা করা দরকার। দ্রুত চিকিৎসা নিলে এটি ভালো হয়। যত বেশি দেরি করবে, তত বেশি মৃত্যুর হার বাড়বে।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যারা আসছে, বেশি খারাপ অবস্থায় আসছে। যার কারণে তাদের অক্সিজেন দিয়েও এটি রিকভার করা যাচ্ছে না।’
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার শামীম ইয়াজদানী বলেন, আগে আমাদের এখানে ৬০ থেকে ৬৫ জন রোগী ভর্তি থাকত। তখন দুই-তিনজন মারা যেত। এখন আছে ৩০০-এর ওপরে। মৃত্যুও আনুপাতিক হারে বাড়ছে।’
এমন মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, মারা যাওয়াদের মধ্যে বড় একটি অংশ বয়স্ক। যাদের বয়স ৬০ বছরের ওপরে। তাদের আরও অনেক রোগ থাকে। হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিসের সমস্যা. কিডনি জটিলতা ইত্যাদি। আর অন্য রোগে আক্রান্তরা করোনায় আক্রান্ত হলে তাদের ঝুঁকিটাও বেড়ে যায়। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়।
এ ছাড়া অনেকেই দেরিতে রোগী হাসপাতালে আনছে। তাদের অক্সিজেন লেভেল কমে যাচ্ছে। কেউ কেউ অক্সিজেন লেভেল কম থাকলেও বাসাতেই থাকছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসার ফলে তাদের আর বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।