সড়ক দুর্ঘটনায় আপন দুই ভাইয়ের পরিবারের পাশে ইয়াসিন-মাহমুদা স্মৃতি পরিষদ
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের বলিদাপাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর মেজো ছেলে রকিব ও ছোট ছেলে সোহেল রানা। অভাবের সংসারে নিজের সম্পত্তি বলতে বাড়ির ভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই তাদের। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে ট্রাকের চালক ও সহকারীর কাজ করতেন তারা দুই ভাই। ভাঙা ঘরে তাদের সন্তানদের নিয়ে কোনো রকম দুঃখ-কষ্টে চলে জীবন। সম্প্রতি রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আপন দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়। উপার্জনক্ষম দুটি পরিবারে নেমে আসে অন্ধকার। তাদের দুযই পরিবারে অভাব-অনটনের সংসারে ঠিকমতো খাবার জোগানো, পড়াশোনাসহ অন্যান্য খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলো। এ অবস্থায় অসহায় দুই পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছে ইয়াসিন-মাহমুদা স্মৃতি পরিষদ। তাদের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বিকেলে ইয়াসিন-মাহমুদা স্মৃতি পরিষদ যুব পরিষদের আহবায়ক বিপুল হোসেন ও অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মাওলানা মহিউদ্দিন আল কাদরীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এসব সহায়তা প্রদানের সময় নিহত দুই পরিবারের ভালো-মন্দ খোঁজখবর নেন ইয়াসিন-মাহমুদা স্মৃতি পরিষদ যুব পরিষদের আহবায়ক বিপুল হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘ইয়াসিন-মাহমুদ স্মৃতি পরিষদ মানুষের কল্যাণে কাজ করে। বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা স্বরুপ তাদের পড়ালেখার ব্যবস্থা করে দেয়াসহ সামাজিক ও মানবিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয়ে থােক। এছাড়াও মেডিকেল ক্যাম্প, বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ, টিউবওয়েল প্রদান, খেলাধুলার জন্য ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ, সেলাই মেশিন বিতরণ, হুইল চেয়ার বিতরণসহ নানান ধরনের সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে।
কথা বলতে গিয়ে কান্নায় দুই চোখ ভিজে আসে নিহত সোহেল রানার স্ত্রী কাজলীর। কাজলী বলেন, ‘গেল ঈদেও ওর বাবার সাথে ঈদ করেছে। কিন্ত কি থেকে কি হলে গেলো। আমাদের সহযোগীতার জন্য কেউ কোন যোগাযোগ করেনি। তবে ডা: ইফতেখার মাহুমসদত আমাদের খোজখবর নিয়েছে এ্ই আমার সন্তানের পড়ালেখার দায়িত্ব নিয়েছে। ইয়াসিন-মাহমুদ স্মৃতি পরিষদের চেয়ারম্যান ডাঃ ইফতেখার মাহমুদের জন্য অনেক অনেক দোয়া কামনা করে তিনি বলেন, ডাক্তার সাহেব যেন হাজার বছর সুখে-শান্তিতে বেঁচে থাকে। আল্লাহ তার মঙ্গল করুক। আমরা শুনেছি তিনি খুবই ভালো মানুষ। তিনি এলাকার গরিব মানুষগুলাকে খুব সাহায্য-সহযোগিতা করে। তার মতন ভালো মানুষগুলা দেশে আছে, সেই জন্যে অনেক গরিব মানুষের উপকার হয়।
ইয়াসিন-মাহমুদ স্মৃতি পরিষদের চেয়ারম্যান ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা অধ্যক্ষ ডাঃ ইফতেখার মাহমুদ বলেন, এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মিরপুরের মশান বাজার এলাকার দুই সহোদর রফিক ও সোহেল নিহত হন। সেদিন দুজনের জানাজায় অংশ গ্রহণ শেষে মৃতদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করি এবং একই পরিবারের দুই ভাইয়ের অকাল মৃত্যুর ঘটনায় এতিম দুই সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব গ্রহণ করি। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল ইয়াসিন-মাহমুদ স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদ উল আজহা উপলক্ষে তাদের হাতে নগদ অর্থ ও তাদের দুই সন্তাদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ায় জন্য অর্থ সহায়তা প্রদান করেছি।
ভবিষ্যতে এ ধরনের সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।