জাহাঙ্গীর এর চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পূরণ হলো গুরু আশ্রমের
——————————–
মুনমুন আক্তার।। মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেনা ও বন্ধু মানুষ——।।
বিখ্যাত কন্ঠ শিল্পী ভূপেন হাজারিকার গাওয়া এই কালজয়ী গানের কথা যদি আমাদের সমাজের মানুষের একটু উপলব্ধিতে আসতো তাহলে নিশ্চয়ই আমাদের সমাজের চিত্র ভিন্ন হতো।দ্বন্দ্ব,ফ্যাসাদ, হানাহানি,সন্ত্রাস ,রাহাজানী, খুন-খারাপি সব ধরনের অশান্তি দূর হয়ে যেতো। মানুষ হতো মানবিক। বিবেক হতো জাগ্রত। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মানুষের সংখ্যা বেড়ে যেতো।বৈশ্বিক মহামারী করোনা কালে যেমন দেখেছি কিছু মানুষের মানবিকতা আবার দেখেছি মানুষরূপী কিছু অমানুষের নিষ্ঠুরতা। এ চিত্র করোনাকালে নয় সবসময়ই পরিলক্ষিত হয়। তবুও জীবন থেমে থাকে না। নানা রকম চড়াই-উৎরাই পাড়ি দিয়ে এগিয়ে যেতে হয় সন্মুখে। কারো ডাক শুনে কেউ যদি না আসে তবু একলা চলার দৃঢ় প্রত্যয় থাকতে হয় জীবন সংগ্রামে। এরপরও কথা থাকে। কখন কে যে কিভাবে কোন বিপদে পড়ে যায় তা কেউই বলতে পারে না। যেমন পারেনি বলতে জাহাঙ্গীর। স্ত্রী তিন মেয়ে নিয়ে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে মোটামুটি ভালই চলছিল দিন। এরই মধ্যে হঠাৎ করে চরম বিপর্যয় নেমে আসে তার জীবনে। যা কখনো সে কল্পনাও করতে পারেনি। মাত্র সাতাশ আঠাশ বছরের জাহাঙ্গীর মাথায় চরম ব্যথা অনুভব করতে থাকে। দিনদিন ব্যথার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় স্বজনদের পরামর্শে রাজশাহী পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাঃ রেজা নাসিম রনির সরণাপন্ন হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধরা পরে যে জাহাঙ্গীর ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত এবং তাকে এক মাসের মধ্যে অপারেশন করতে হবে। এ কথা শোনার পর জাহাঙ্গীরের মাথায় যেন বাজ ভেঙে পড়ে। দিনমজুর জাহাঙ্গীর চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় অপারেশনের কথা শুনে। সামান্য যে কয় টাকা রোজ আয় হয় তাতে সংসারই চলতে চায় না। তার ওপর অপারেশনসহ সামগ্রিক চিকিৎসার ব্যয়ভার কিভাবে যোগান দেবে তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। বিষয়টি ভাই বোনসহ স্বজনদের জানালে ভাইয়েরা আর্থিকভাবে সহযোগিতা হাত বাড়ালেও প্রয়োজনের তুলনায় অর্থের যোগান অনেকটাই ঘাটতি থাকে। এই বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরে গুরু আশ্রমের চেয়ারম্যান জনাব এস এম রাজা তার সাথে যোগাযোগ করে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন এবং সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখেন। জাহাঙ্গীরের সফল অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে ইতিমধ্যেই। ভারতের ভেলোর থেকে তার ব্রেন টিউমার অপারেশন শেষে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় এবং পরপর ৩০ টি থেরাপি নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে থেরাপি নেওয়াও সম্পন্ন হয়েছে। জাহাঙ্গীর পুরোপুরি সুস্থ না হলেও চলাফেরা করতে পারছিল কিন্তু হঠাৎ করে তার মাথার অপারেশনের জায়গায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করছে বেশ কিছুদিন যাবৎ। ডাঃ তাকে পরামর্শ দিয়েছেন চেকআপ করানোর জন্য। কিন্তু আবার সেই বিপদ চেকআপের জন্যও সর্বনিম্ন প্রায় ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকার প্রয়োজন। গুরু আশ্রম বরাবরের মতোই তার পাশে দাঁড়িয়ে আবারো পাঁচ সহস্রাধিক টাকা সহযোগিতা করেছেন। জাহাঙ্গীরের পরিবারে সহযোগিতায় সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।