ঈশ্বরদী থেকে এস এম রাজা।।
লোকসানের অজুহাতে পাবনার দাশুড়িয়ায় অবস্থিত পাবনা সুগার মিল (পাসুমি) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।গত ২ ডিসেম্বর’২০ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই মিল বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়। পাবনা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, চিনি আহরণের হার কম, আখের জমি, মিলের অবস্থা /লোকসান ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বিবেচনায় চলতি মৌসুমে মিলে আখ মাড়াই বন্ধ সহ মিলটি বন্ধ ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত এক চিঠিতে। তবে মিল জোনে উৎপাদিত ও কৃষকের সরবরাহকৃত আখ নিকটস্থ চালু চিনিকলে সরবরাহ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে। পাবনা সুগার মিল প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ক্রমাগত লোকসান দিয়ে আসছে। এ যাবৎকাল এই মিলটি ৫ শ ৬৭ কোটি টাকারও বেশি লোকসান দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ১৯৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের পাকুরিয়া মৌজার জোতগাজিতে পাকিস্তান সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় পাবনা সুগার মিল (পাসুমি) প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে মিলটি পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করে। এই মিলটি উৎপাদনে যাওয়ার পর থেকেই উৎপাদন ঘাটতি ও লোকসানের কবলে পড়ে। আখের স্বল্পতা, চিনি আহরণের হার কম থাকা, মাথা ভারী প্রশাসন, সুদসহ ঋণের কিস্তি পরিশোধ, উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়াসহ নানাবিধ সংকটের কবলে পড়ে মিলটি ক্রমাগত লোকসান দিতে থাকে। এ পর্যন্ত মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ শ ৬৭ কোটি টাকারও অধিক। বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সনদ কুমার সাহা ক্রমাগত লোকসানের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছেন, সরকার নিতান্তই বাধ্য হয়ে মিলটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এদিকে এই মিল বন্ধের প্রতিবাদে মিলের শ্রমিক কর্মচারীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। তারা প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে। মিল বন্ধের ঘোষণাকে সরকারের হটকারী সিদ্ধান্ত বলে শ্রমিক-কর্মচারীরা দাবি করেছে।
এস এম রাজা, ঈশ্বর দী, পাবনা।