দিনাজপুর থেকে এম এ মজিদ।।
দিনাজপুর পৌরসভায় আজ ১০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার গিয়েছিলাম মেয়র মহোদয়ের সাথে দেখা করে একটা বিষয় জানার জন্য। বিষয়টি হচ্ছে, দিনাজপুর পৌরসভা এলাকায় নিজ বাসায় বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধারা হোল্ডিং ট্যাক্স এবং অন্য কোন সুবিধা পান কিনা? কিন্তু সেসময় মেয়রকে না পেয়ে পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এযাবৎ কোন মুক্তিযোদ্ধাকে এ রকম কোন সুবিধা দেওয়া হয়নি এবং পৌরসভার ট্যাক্স মওকুফ কমিটির সর্বোচ্চ ক্ষমতা ১৫% পর্যন্ত। ১০০% হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের ক্ষমতা পৌরসভার নেই।
আমার কাছে বিষয়টি আশ্চর্য লাগলো এজন্য যে, মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ বাড়িতে বসবাসের জন্য ঢাকা পৌরসভা এবং পরবর্তীতে ঢাকা সিটি করপোরেশন এক হাজার বর্গ ফুটের বাসার হোল্ডিং ট্যাক্স শতভাগ মওকুফ ছিল ২০১৬ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ঢাকার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের দেড় হাজার বর্গ ফুটের বসবাসরত নিজ বসতবাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স শতভাগ মওকুফ করেছে, যা এখনও বলবৎ রয়েছে। এ ছাড়াও দেশের অনেক পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ বসতভিটার হোল্ডিং ট্যাক্স শতভাগ মওকুফ করে আসছে।
অথচ দিনাজপুর পৌরসভাটি একটি এ গ্রেডের পৌরসভা। দূঃখজনক হলেও সত্য যে, দিনাজপুর পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ বসতভিটার হোল্ডিং ট্যাক্স এখন পর্যন্ত মওকুফের প্রথা শুরু করে নাই। আরো জানা গেছে যে, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিনাজপুর জেলা ইউনিট কমান্ড থেকেও এ যাবৎ পৌরসভাকে এধরণের কোন আবেদনও করে নাই।
আমরা আশা করবো – দিনাজপুরের সবার প্রিয় পৌরমেয়র মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নিজ বসতভিটায় বসবাসরত বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ করে একটি দৃষ্টান্ত স্হাপন করে দিনাজপুরের মুক্তিযোদ্ধাদের মনের মনিকোঠায় স্হান করে নিবেন – এটাই দিনাজপুর পৌরবাসীর একান্ত প্রত্যাশা।
………………………………………………………..
গত ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি পাঠকের জন্য হুবহু পোস্ট করলামঃ
রাজধানীর মুক্তিযোদ্ধাদের গৃহকর মওকুফঃ
রাজধানীতে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ির ১ হাজার ৫০০ বর্গফুট আয়তন পর্যন্ত গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) মওকুফের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
গতকাল শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সংবর্ধনা ও পুনর্মিলনীতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি। এতে প্রায় তিন হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে এক হাজার বর্গফুট পর্যন্ত গৃহকর মওকুফ করে এই দুই সিটি করপোরেশন।
ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছেন। অথচ স্বাধীনতার এত দিন পরও তাঁদের চাহিদা আমরা পূরণ করতে পারিনি। ঢাকায় বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন সময় তাঁদের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের আবেদন করেছেন। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক ও লজ্জার। তাই ডিএসসিসি ও ডিএনসিসি এলাকায় সব মুক্তিযোদ্ধার ১ হাজার ৫০০ বর্গফুট আয়তনের বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ করা হবে।’ এ সময় ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হকও তাতে সম্মতি জানান।
সাঈদ খোকন বলেন, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে শিগগিরই ডিএসসিসি ও ডিএনসিসিতে পৃথক তহবিল গঠন করা হবে। এ ছাড়া কেউ সিটি করপোরেশনের কমিউনিটি সেন্টার ব্যবহার করতে চাইলে বিশেষ ছাড়ে ভাড়া দেওয়া হবে।
ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘এ দেশের প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার গল্প একেকটি ইতিহাস। তাঁদের এ আত্মত্যাগের কারণেই আমরা একটি স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছি। স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারি। তাঁদের জন্য ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির যা যা করার দরকার সবই করবে।’
অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল প্রমুখ বক্তব্য দেন।