ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি।।
পাবনার ঈশ্বরদীতে পাওনা সাত হাজার টাকার জন্য ছেলেকে গাছের সঙ্গে বেঁধে প্রহার করার খবর শুনে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে লাথির আঘাতে মারা গেলেন মা সেলিনা বেগম (৫২)। ঘটনাটি ভিন্নখাতে চালানোর জন্য কয়েক ঘন্টা চেষ্টাও চালানো হয়। কিন্তু ৯৯৯ খবর পেয়ে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
বুধবার দুপুরে উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডার নুরুল্লাপুর কুতুব মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত সেলিনা বেগম ওই এলাকার আইয়ু্ব আলী সরদারের স্ত্রী।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীকুন্ডার নুরুল্লাপুর এলাকার আইয়ুব আলী সরদারের ছেলে লিমনের নিকট থেকে একই এলাকার নাসিমের ছেলে বিপুল কলা কেনাবেচা বাবদ সাত হাজার টাকা পাওনা ছিল। কয়েকদিন পূর্বে নাসিম ও তার ছেলে বিপুল সেই টাকার জন্য লিমনকে আটক করে। তখন লিমনের বড় ভাই সুমন মধ্যস্থকারী হিসেবে কয়েকদিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে চেয়ে ছোটভাইকে ছাড়িয়ে আনেন। কিন্তু সময়মত টাকা দিতে পারেনি সুমন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার দুপুরে বাড়িতে থেকে বের হয়ে ডিম আনার জন্য কুতুব মোড়ে গেলে সুমনকে ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে নাসিম, তার ছেলে বিপুল ও তাদের সহযোগি ফন্টু মিলে প্রহার করতে থাকে। খবর শুনে রান্না চলাকালে ভাত ও তরকারি চুলাই রেখেই সুমনের মা সেলিনা বেগম ছেলেকে বঁাচাতে ঘটনাস্থলে যান। ছেলেকে বেদম প্রহার করতে দেখে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এই সময় নাসিম ওই বৃদ্ধার তলপেটে লাথি মারেন। এতে অচেতন হয়ে বৃদ্ধা সেলিনা বেগম পড়ে যান। দ্রুত উদ্ধার করে তাকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সেলিনা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।
সুত্রগুলো মতে, ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালীরা পুলিশকে না জানিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ দাফনের চেষ্টা করেন। কিন্তু নিহতের স্বজনরা অসহায় হয়ে ৯৯৯ ফোন করেন। খবর পেয়ে পুলিশ সন্ধ্যায় নিহতের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানা নিয়ে যান।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, নিহত সেলিনা বেগমের মৃত্যুর কারণ জানতে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে পরবর্তি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই বিষয়ে থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। ###