ঈশ্বরদী (পাবনা) উপজেলা সংবাদদাতা।। সাম্প্রতিককালে ঈশ্বরদী উপজেলায় দূর্ধর্ষ ছিনতাই বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় ৭টি ছিনতাই সংঘঠিত হয়েছে ঈশ্বরদী পৌর সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গত ৩ মাসে।সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, গত ৩ জুন’২১ ঈশ্বরদী পৌর এলাকার পশ্চিমটেংরী কামিনী হাসপাতাল রোডে নিজ বাড়ির সামনে এ কে এম গোলাম হাক্কানির স্ত্রী নাজমুননাহার ও মেয়ে ফারহাদিবা ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। তারা ঈশ্বরদী বাজার থেকে রিকশাযোগে বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর সাথে সাথে মটরসাইকেল যোগে ৩ জন ছিনতাইকারী এসে গলায় ছুঁরি ধরে স্বর্ণের চেইন নিয়ে নির্বিঘ্নে চলে যায়। গত ১৬ মে’২১ ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় শহরের ভূতেরগাড়ী এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম রাজুর মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। গত ১৪ মে’২১ রাত আনুমানিক সাড়ে ৯ টার সময় ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের মিরকামারী গ্রামের গোলাম জাকারীয়ার ছেলে আরিফুজ্জামান শিশির তার স্ত্রী পুত্র নিয়ে ঈশ্বরদী বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আলহাজ্ব মোড় নামক স্থানে দুই ছিনতাইকারী মটরসাইকেল যোগে এসে তাদের গতিরোধ করে ঈদের কেনাকাটা করা হ্যান্ডব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। গত ১৩ মে’২১ ঈশ্বরদীর সানন্দা বিউটিপার্লারের সত্ত্বাধিকারী সুলতানা জাহান সিমু রিকশাযোগে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলা রোডে চামড়া গুদামের নিকট মটরসাইকেল নিয়ে আসা ৩ জন ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে দুই ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এর আগের দিন সন্ধ্যায় ঈশ্বরদী বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে হোসেন আলী নামের এক ব্যবসায়ী। শহরে পিয়ারাখালি গোরস্থানের নিকট মটরসাইকেলে চড়ে আসা ৩ ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে কাছে থাকা ৮ হাজার টাকা অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। ওদিকে গত ২ এপ্রিল’২১ প্রকাশ্যদিবালোকে বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে পশ্চিমটেংরী কামিনী হাসপাতালের নিকট ওই এলাকার বাসিন্দা কালাম সরদারের স্ত্রী মমতাজ বেগমকে অস্ত্র ধরে সাড়ে ৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। তার আগে গত ৩০ মার্চ’২১ রাত ৯ টার দিকে ঈশ্বরদী পৌর এলাকার বাবু পাড়া সোহেল ইকবাল আনন্দের স্ত্রী স্কুলপাড়া থেকে নিজের বাড়িতে ফেরার পথে কামিনী হাসপাতালের কাছে আসা মাত্র ৩ ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে গলায় চাকু ঠেকিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসব ঘটনায় বিচ্ছিন্নভাবে কেউ কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের হয়নি। তবে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ভুক্তভুগী কেউ মামলা দায়ের না করলেও আমরা ছিনতাইকারীদের চিহ্নিত করে আটক করার চেষ্টায় আছি এবং ছিনতাই প্রতিরোধে সচেষ্ট আছি। পর পর সংঘঠিত একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনায় ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ফিরোজ কবির বলেন, ছিনতাইয়ের এই ঘটনাগুলোকে আমরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ইতিমধ্যেই প্রাপ্ত এজাহার অনুযায়ী আমরা ছিনতাইকারীদের সনাক্ত করার চেষ্টা করছি তথ্য প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে। খুব শিঘ্রী ছিনতাইকারী চক্রকে আটক করতে সক্ষম হবো বলে আশা করছি। আকষ্মিকভাবে ঈশ্বরদীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ কি হতে পারে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে বেকার হয়ে পড়া হতাশাগ্রস্থ অবস্থা থেকেও ছিনতাইয়ের প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে। যাই হোক, ছিনতাই প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।