ঈশ্বরদীতে স্বামী শাশুড়ির নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধুর আত্মহত্যা
ঈশ্বরদী (পাবনা )প্রতিনিধি:
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর মাদ্রাসা পাড়া এলাকার জহুরুল ইসলাম (জলুর)কন্যা যুথি খাতুন (২০) ২১শে আগস্ট (সোমবার) সকালে ঘরের ডাবের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়,গত ৫ বছর পূর্বে পাবনা জেলার আতাইকোলা উপজেলায় দুবলিয়া বাজারের মিন্টুর ছেলে উৎস (২৬) সাথে ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের মুরগি ব্যবসায়ী জরুহল ইসলাম (জলুর) মেয়েকে বিয়ে দেন।জলু জানান, বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রী সুখে শান্তিতে বসবাস করছিল কিন্তু ১ বছর যেতে না যেতেই মেয়ের শাশুড়ির সাথে কারণে অকারণে ঝগড়া লেগেই থাকতো ।জলু মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তিন বছর আগে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট নগদ চার লক্ষ টাকা দিয়েছিল । গৃহবধূ যুথিকে তার বাবার থেকে মোটরসাইকেল কিনে নেয়ার জন্য বারবার নির্যাতন করত । মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আবারও জলু আরটিআর মোটরসাইকেল কিনে দেয় জামাই উৎসকে । জলু আরোজানান,গত তিন মাস আগে অটো বাইক কিনে নেয়ার জন্য আমার মেয়েকে জামায় ও বিয়ান মিলে ব্যাপকভাবে মারপিট করে, যাতে আমি অটো বাইক কিনে দেই । এতে আমার মেয়ে রাজি না হওয়ায় মেয়েকে মারপিট করে বাড়ির বাইরে বের করে দেয় । আমি খবর পেয়ে দুবলিয়াতে গিয়ে মেয়েকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি । এ বিষয়ে দুবলিয়া ফাঁড়িতে একটি অভিযোগ দেওয়া আছে । গত কয়েকদিন ধরে নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায় । গত শুক্র ও শনিবার স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতন করার কারণে পুনরায় বাবা জলুকে খবর দেয় গৃহবধূ যুথি। খবর পেয়ে জহুরুল ইসলাম রবিবার দুপুরে পাবনাতে গিয়ে উপায়ান্ত না দেখে জহরুল ইসলাম তার মেয়েকে নিয়ে জয়নগরে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন । গতরাতে মা মেয়ে একই রুমে ঘুমাতে ছিল। সকালে মা বিছানা ছেড়ে আসলেও মেয়ে শুয়ে থাকে। এরই ফাঁকে আজ ২১ আগস্ট সকাল ৮ টার সময় মেয়ে ঘরের মধ্যে দরজায় খিল দিয়ে ঘরের ডাবের সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। বাহির থেকে তার মা বুঝতে পেরে জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখে তার মেয়ে ঘরের ডাবের সঙ্গে ঝুলছে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে যুথিকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার যুথিকে মৃত ঘোষণা করেন। ঈশ্বরদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী ,অফিসার ইনচার্জ ওসি অরবিন্দ সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে মরাদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাবনা মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে ওসি অরবিন্দ সরকার জানান । অপরদিকে মেয়ের বাবা জহুরুল ইসলাম মেয়ের আত্মহত্যার জন্য মেয়ের স্বামী, শশুর, শাশুড়িকে আসামি করে ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে ।