আসমান আলী।। আজ বাংলার গানের পাখি পল্লী গীতিও লোকসঙ্গীত সম্রাট আব্বাসউদ্দীন এর ১১৯তম জন্মজয়ন্তী।
ভাওয়াইয়া, পল্লী গীতি, ও লোক সঙ্গীত সম্রাট আব্বাসউদ্দীন এর আজ ১১৯তম জন্ম বার্ষীকি। ১৯০১ সালের ২৭ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ মহকুমার বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জাফর আলী আহমদ ছিলেন তুফানগঞ্জ মহকুমা আদালতের উকিল। বলরামপুর স্কুলে আব্বাসউদ্দীনের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১৯১৯ সালে তুফানগঞ্জ স্কুল থেকে তিনি প্রবেশিকা এবং ১৯২১ সালে কুচবিহার কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। এখান থেকে বিএ পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হয়ে তিনি সংগীতের জগতে প্রবেশ করেন। একজন কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আব্বাসউদ্দীনের পরিচিতি দেশজোড়া। আধুনিক গান, স্বদেশি গান, ইসলামি গান, পল্লিগীতি, উর্দু গান—সবই তিনি গেয়েছেন। তবে পল্লিগীতিতে তাঁর মৌলিকতা ও সাফল্য সবচেয়ে বেশি। জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, বিচ্ছেদি, দেহতত্ত্ব, মর্সিয়া, পালা ইত্যাদি গান গেয়ে জনপ্রিয় হন। তিনি তাঁর দরদভরা সুরেলা কণ্ঠে পল্লিগানের সুর যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন, তা আজও অদ্বিতীয়। দেশ বিভাগের পর (১৯৪৭ সালে) ঢাকায় এসে তিনি সরকারের প্রচার দপ্তরে অ্যাডিশনাল সং অর্গানাইজার হিসেবে চাকরি করেন। ‘আমার শিল্পীজীবনের কথা’ (১৯৬০) আব্বাসউদ্দীনের রচিত একমাত্র গ্রন্থ। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর প্রাইড অব পারফরমেন্স (১৯৬০), শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭৯) এবং স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে (১৯৮১) ভূষিত হন। ১৯৫৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর পল্লিগানের এই মহান সম্রাট মৃত্যুবরণ করেন।