অবৈধ বালু উত্তোলন ও স্তূপীকৃত করণের কারণে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু হুমকির মুখে
————————-
ঈশ্বরদী (পাবনা) উপজেলা সংবাদদাতা।। ঈশ্বরদীর রেল বিভাগীয় শহর পাকশীর নিকটবর্তী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পদ্মা নদী থেকে যুগ যুগ ধরে অবৈধ বালু উত্তোলন ও ব্যবসা পরিচালনা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি।
অন্যদিকে বালু পরিবহনের জন্য বিশালাকৃতির ট্রাক চলাচলের কারণে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ পড়েছে চরম হুমকির মুখে।রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ম্যানেজার সহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা বলা যায় ঘটনাস্থলে স্তূপীকৃত বালু মহলের সাথে একরূপ পিঠ ঠেকিয়ে অফিস করলেও তারা কখনোই এই ব্যাপারে কোন প্রকার অজোর আপত্তি করেননি। বিশেষ সুবিধা গ্রহণর মাধ্যমে কৃষি জমিতে এমন অবৈধ কর্মকান্ড পরিচালনার সুযোগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে নিজেদের গা বাঁচানো এবং বদনাম ঘোচাতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের আশেপাশের বালু মহল ও বালুর স্তূপ ৩০ জুলাই-এর মধ্যে সরিয়ে নেয়ার জন্য অতি সম্প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় স্তূপীকৃত বালু নিলামে বিক্রি করে দেয়া হবে বলেও হুশিয়ার করে দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু কেপিআইভুক্ত এলাকা বিধায় এই সকল ব্রিজের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন, ড্রেজিং, মাছ ধরা, নৌকা ভ্রমণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একই সঙ্গে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে প্রবেশ পথে কাঁটাতারের বেড়া এবং মূল ব্রিজের দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। অথচ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন রেলের জমি কৃষি কাজের জন্য লিজ নিয়ে কিছু ব্যক্তি অবৈধভাবে বিশাল বিশাল বালুর স্তূপ করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা চরমভাবে বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তাদের জানা থাকা সত্ত্বেও
বিশেষ সুবিধা প্রাপ্তির কারণে প্রভাবশালী মহলকে সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর উভয় পাশে পদ্মার গাইড ব্যাংকের বিশাল এলাকাজুড়ে বালুর স্তূপ করা হয়েছে যা দূর থেকে দেখে মনে হবে পাহাড়ের মতো। প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক হাজার ট্রাক বালু এখান থেকে বিক্রি হয় যা টাকার অংকে ২০ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা বেচাকেনা হয় বলে জানা যায়।
বিপুল অংকের টাকা এসব বালু মহল থেকে ট্রাকপ্রতি এবং বালুর ফুট হিসাবে চাঁদা আদায় করা হয়। আদায়কৃত চাঁদা প্রভাবশালীদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়।
এখন রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে যেন আর নতুন করে বালু স্তূপ করা না হয় এবং স্তূপীকৃত বালু দ্রুত সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।
পাকশী রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিইএন-২) বীরবল মণ্ডল বলেন, বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে নদীর তীররক্ষা বাঁধ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিরাপত্তার স্বার্থে বালু মহাল বা বালুর স্তূপ এখান থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বালুর স্তূপ এখান থেকে সরানোর পর ব্রিজের নিরাপত্তার জন্য আশপাশের এলাকা কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকা থেকে বালুর স্তূপ সরিয়ে নেওয়ার জন্য মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বালু ব্যবসায়ীরা এখান থেকে সরিয়ে না নিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সচেতন মহল রেলওয়ের ঘোষিত নির্দেশনার সঠিক বাস্তবায়ন দেখার অপেক্ষায় আছেন।
প্রেরকঃ এস এম রাজা
ঈশ্বরদী, পাবনা।