বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য,  ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু বলেছেন, নিজেদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে নেতাকর্মীদের ঐক্য ভাঙা যাবে না। প্রয়োজনে আমি সংসদ নির্বাচনে এমপি প্রার্থী চাইবো না। প্রয়োজনে মেয়র প্রার্থীতাও ত্যাগ করবো। তবু ঐক্য ভেঙে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হতাশায় ফেলবো না। পাবনা-৪ আসন ফিরে পেতে সকল নেতাদের ঐক্য ঠিক রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় ঈশ্বরদী প্রেস ক্লাব মিলনায়তন কক্ষে স্থানীয় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাবলু এসব কথা বলেন।
মকলেছুর রহমান বাবলু বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর পর ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আওয়ামী বাকশালী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। কিন্তু হরিলুটের অবৈধ শেখ হাসিনার সরকার দেশকে ধ্বংসস্তূপে রেখে গেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে।
প্রতিটি ক্ষেত্রে অনিয়ম, দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ করে রেখে গেছে। মানুষের অধিকারকে হরণ করেছে।
সেই জায়গা থেকে দেশকে একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মোহাম্মাদ ইউনূসের নেতৃত্বে কাজ করে যাচ্ছেন। যোগ্য নেতৃত্ব আর সংস্কার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গতানুগতিক রাজনীতির বাইরে নতুন ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মাদ ইউনুস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ৯০ সালে ঈশ্বরদীর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য ছিল ইস্পাতের মতো। এ কারণে ৯১ সালে নির্বাচনে এখানে বিএনপির প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী লাভ করে। কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যক্তিগত স্বার্থ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টির কারণে আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়। তাই আসনটিকে বিএনপির দখল নিতে হবে। এই জন্য প্রয়োজনে নিজের পদ ছেড়ে কর্মী হয়েই দলের পক্ষে কাজ করতে হবে।
বাবলু আরো বলেন, চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি শহরের পুরাতন বাস টার্মিনালে সংবর্ধনায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যের ডাক দেওয়া হয়। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে রাজনৈতিকভাবে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে আসে।
কিন্তু সম্প্রতি হাবিবুর রহমান হাবিব ও জাকারিয়া পিন্টুর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘোষিত ঐক্যের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বেড়েছে। তারেক রহমানের কাঙ্ক্ষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আলোকিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীকে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে ঐক্যবদ্ধ এবং সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তাই নেতাদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেয়। এতে যদি আমি বাবলুকে দলের দায়িত্বশীল পদ, সংসদ সদস্য ও মেয়র প্রার্থীতা ত্যাগ করতে হয় তবু ত্যাগ করবো। একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে দলের কাজ করবো। তবু নেতাকর্মীদের মধ্যে অনৈক্য দেখতে চাই না।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা আজমল হোসেন ডাবলু, ভাষা প্রামানিক, তুহিন চৌধুরী, মাহাবুবুর রহমান পলাশ, রেজাউল করিম ভিপি শাহিন, সিদ্দিকুর রহমান মিলন মেম্বার, রফিকুল ইসলাম নয়ন, মহিলা দলের রোকেয়া পারভিন, খাদেজা পারভিন নীপাসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য,  বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু সভা-সমাবেশে সম্প্রতি পরস্পরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ নানা বিষয়ে অভিযোগ তুলে বক্তব্য দিয়ে আসছেন। এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটেই এই সংবাদ সম্মেলন করেন সাবেক মেয়র বাবলু।