বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ০২:০৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ ::
নানা আয়োজনে ঈশ্বরদীতে উদযাপিত হলো স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ঈশ্বরদীতে মাদকাসক্ত স্বামীর চাপাতির কোপে স্ত্রী গুরুতর আহত পাবনায় অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান ,রিভলবার ও ওয়ান স্যুটারসহ আটক-২। সাংবাদিকতায় সম্মাননা পেলেন সিনিয়র সাংবাদিক তৌহিদ আক্তার পান্না, গুনিজন সংবর্ধনা দিলো স্বপ্ন কম্পিউটার  ঈশ্বরদীতে নিখোঁজ যুবকের চুয়াডাঙ্গায় লাশ উদ্ধার  ঈশ্বরদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে ১ জনের মৃত্যু নাটোরে বাবার হাতে ছেলে খুন ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় গোরস্থানের দান বাক্সের তালা ভেঙে টাকা চুরি ঈশ্বরদী থানার এএসআই ইকবাল পুরস্কৃত ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের ৪ নেতা গ্রেফতার

প্রধান শিক্ষকের ক্ষমতার দাপটে ধ্বংসের মুখে চররুপপুর বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ

ডিডিপি নিউজ ২৪ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

প্রধান শিক্ষকের ক্ষমতার দাপটে ধ্বংসের মুখে চররুপপুর বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ

ডেস্ক রিপোর্ট।।

পাবনার ঈশ্বরদীর চররূপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পারভেজ রেজার অফিস রুমে ধুমপান, অবৈধ ভর্তি ফি আদায়, প্রত্যায়নপত্র বানিজ্য, বিদ্যালয়ের সংস্কার বাবদ বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ ও ক্ষমতার দাপটে বিনা কারনে শিক্ষকদের অপদস্ত, হয়রানি এবং হুমকিতে ধ্বংস হতে বসেছে বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ। ফলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সেখানে কর্মরত সকল সহকারী শিক্ষকগন। এতে পড়ালেখার সুষ্ঠু পরিবেশ হারিয়েছে কয়েকশ শিক্ষার্থী।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন পাহাড় সমান অভিযোগ নিয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর গত ৫ মে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়টিতে কর্মরত ৭ সহকারী শিক্ষক। খবর পেয়ে মঙ্গলবার ১৩ই মে সরজমিনে বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে গিয়ে এসব অভিযোগের বাস্তব চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পারভেজ রেজা বিদ্যালয়ের পাশের একটি চায়ের দোকানে বসে চা সিগারেট পান করছেন। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি বিদ্যালয় আসেন।
অভিযোগকারী ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লতিফা বেগম, শারমিন আক্তার, আয়েশা খাতুন, আরিফা খাতুন, খাদিজা আক্তার, সেকেন্দার আলী ও রবিউজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও বিনা কারনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পারভেজ রেজার উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, হুমকি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং হয়রানির কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তারা।
শিক্ষকদের অভিযোগ পারভেজ রেজা স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় সবসময় ক্ষমতা দাপট দেখান। শিক্ষার্থীদের সামনেই তুচ্ছ কারণে অপদস্ত করেন সব শিক্ষকদের। এমনকি দুপুরে বিরতির সময় শিক্ষিকারা নামাজ রুমে বিশ্রাম নিতে গেলে পারভেজ রেজা জানালা এবং দরজা দিয়ে উঁকিঝুঁকি দেন। এতে আপত্তি জানালে উল্টো বিশ্রী ভাষায় বকাবকি করেন প্রধান শিক্ষক।
উপস্থিত কয়েকজন অভিভাবক জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে বিদ্যালয়টির টিউবওয়েল নষ্ট। গভীর নলকূপ দীর্ঘদিন নষ্ট হয়ে থাকলেও বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তার ঠিক করা হয়নি। অপরিচ্ছন্ন টয়লেটের কারনে স্বাস্থ্য ঝুকিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। প্রতিবছর বিদ্যালয়ের সংস্কার বাবদ যে বরাদ্দ আসে তার দৃশ্যমান কোনো সংস্কার না করে প্রধান শিক্ষক নিজে আত্মসাৎ করেন। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, জাতীয় দিবসে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার না কিনে মুক্তিযোদ্ধা কর্নার ও শেখ রাসেল কর্নারে থেকে গচ্ছিত বই ও ক্রেস্ট শিক্ষার্থীদের হাতে ধরিয়ে ফটো সেশন করে তা আবার রেখে দেন প্রধান শিক্ষক। এমনকি কয়েকজন শিক্ষার্থীর বাড়ি থেকে অনুষ্ঠান পরবর্তী সময়ে ওই সব পুরস্কার ফেরত আনতেও গিয়েছিলেন পারভেজ রেজা। এ নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বাকবিতন্ডাও হয় তার।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক জোরপূর্বক তাদের দিয়ে টয়লেট, অফিস রুম ও বিদ্যালয় মাঠ পরিস্কার করান। এতে শিক্ষার্থীরা অসম্মতি জানালে বাজে ভাষায় বকাবকি করেন পারভেজ রেজা। এসব বিষয়ে শিক্ষকরা আপত্তি জানালেই তাদের ওপর নেমে আসে মানসিক নির্যাতন, হুমকি ও নানারকম হয়রানি।

এদিকে শিক্ষার্থীদের দিয়ে বার্ষিক পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন ও বিদ্যালয়ের অফিস রুমে বসে ধূমপান করার সচিত্র প্রমান দেখালেও তা অস্বীকার করেন পারভেজ রেজা।
উল্লেখ্য, গত ২০০৬ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পারভেজ রেজা বাঘইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত অবস্থায় তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে স্থানীয়দের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে অবশেষে বদলি হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সাবেক এক সভাপতি জানান, সভাপতি থাকা অবস্থায় পারভেজ রেজার দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে একাধিকবার শিক্ষা অফিস বরাবর অভিযোগ করেছি কিন্তু তারা বিষয়টি আমলেই নেয়নি। সে সময় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে হয়তো আজ বিদ্যালয়ের এই অবস্থা হতো না। ভুক্তভোগী ওই সহকারী শিক্ষকরা আরো জানান, এবার যদি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তবে আমরা সবাই কর্ম বিরতিতে যাব।
এদিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাহানা আক্তার জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাস জানান, যেহেতু প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষা কর্মকর্তাকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শিশির মাহমুদ
ঈশ্বরদী, পাবনা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright 2020 © All Right Reserved By DDP News24.Com

Developed By Sam IT BD

themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!