একবুক যন্ত্রণা ও ক্ষোভ নিয়ে ঘরে বসে দিন কাটাচ্ছেন অসুস্থ্যতায় চোখ হারানো জাসদ নেতা এ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান
——–
এস এম রাজা।। “বিধির বিধান বোঝা বড় দায়
কার ভাগ্যে কি ঘটে কখন কারোই জানা নাই”।
কবির কাব্যের উপরোক্ত পংক্তি টুকুর আবারও সত্যতা মিললো জাসদ নেতা এ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান-এর জীবনে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত দূর্ঘটনায়। সদা হাস্য প্রাণ চাঞ্চল্যে ভরা সদালাপী এই মানুষটির ভাগ্যে এমন করুন পরিনতি নেমে আসবে তা সম্পূর্ণই কল্পনাতিত ছিলো। যার রাজনীতির মাঠে ও নিজস্ব পেশায় সরব থাকার কথা ছিলো অথচ আজকে সে সম্পূর্ণ অচল একজন মানুষ হয়ে ঘরে বসে শুধুই স্রষ্টাকে স্মরণ করে দিন কাটাচ্ছেন।
বিধির বিধান এবং ভাগ্যে লেখা ছিলো বলে মেনে নিতে পারলেও সহজে মেনে নিতে পারছেন না তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জিবনের সহকর্মীদের অমানবিক আচরণ। একবুক যন্ত্রণা ও ক্ষোভ বুকে নিয়ে দিন পাড়ি দিচ্ছেন ত্যাগী এই মানুষটি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানালেন, প্রায় ৭ বছর যাবৎ তিনি অসুস্থ্য এবং প্রায় আড়াই বছর যাবৎ দুটি চোখই নষ্ট হয়ে সম্পূর্ণ অন্ধত্ব বরণ করে ঘরে পড়ে আছেন।
অথচ, তাঁর প্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর কোনো নেতা বা কর্মী একবারও তাকে দেখতে যায়নি। এমনকি তাঁর খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি। কেবলমাত্র তাঁর জীবিকা নির্বাহের জন্য সম্পৃক্ত আইন পেশার মানুষ গুলো এই অসুস্থ্য আইনজীবিকে দেখতে এসেছেন এবং খোঁজ রাখছেন।
বয়সে তরুন হলেও জাতীয় যুবজোটের নেতা জহুরুল ইসলাম জয় তাঁর খোঁজ খবর রাখছেন এজন্য তিনি আইনজীবি ও যুবজোট নেতার প্রতি সন্তুষ্ট ও কৃতজ্ঞ।
অপরএক প্রশ্নের জবাবে এ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান জানান, দলীয় আদর্শের প্রতি অনুগত হয়ে ১৯৭৪ সালে তিনি জাসদের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। আজ অবধি এই সংগঠনের সাথেই তিনি সম্পৃক্ত আছেন। অনেক লোভ লালসা দেখিয়ে বড় দলে টানার চেষ্টা করা হয়েছে বহুবার কিন্তু তিনি জাসদের মায়া ছাড়তে পারেননি। দলের অনেক নেতাকর্মীর দুর্দিনে তিনি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন অথচ আজকে তাঁর এই চরম দুর্দিনে দলের এমন নিষ্ঠুর আচরণ অনাকাঙ্খিত বলে তিনি ভীষন দুঃখ প্রকাশ করেন।
সাহিত্য সংস্কৃতি ও
সামাজিক কর্মকান্ডে সদা আন্তরিকতায় সম্পৃক্ত হওয়া এই মানুষটি স্ত্রী পুত্র পরিবারের সাথে একবুক ব্যাথা বেদনা নিয়ে নীরবে নিঃশব্দে ঘরে বসে দিন কাটিয়ে যাচ্ছেন।
চিরসুন্দর এই পৃথিবীকে আর তাঁর দুই নয়নে দেখার সৌভাগ্য আমৃত্যু হবেনা। ডাক্তাররা এমনটায় বলেছেন। তারপরও পরম করুনাময় স্রষ্টা চাইলে হয়তো তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারেন।
প্রতিবেদকের অপ্রত্যাশিত উপস্থিতিতে তিনি ভীষন ভাবে আপ্লুত হয়ে অশেষ ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা ও অফুরন্ত আর্শীবাদে সিক্ত করেছেন। তিনি দোয়া কামনা করেছেন সকল শুভাকাঙ্খির কাছে।
আমরাও জংসন ডিডিপি পরিবারের পক্ষ থেকে প্রত্যাশা করি পরমকরুনাময় স্রষ্টা যেন তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়ে সুস্থ্য স্বচল করে দেন।