পাবনা মানসিক হাসপাতালের ৯ দালালের কারাদণ্ড
পাবনা সংবাদ দাতা।।
পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুরে অবস্থিত দেশের ঐতিহ্যবাহী পাবনা মানসিক হাসপাতালে দালালচক্রের দৌরাত্ম্য রোধে জেলা প্রশাসন ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) যৌথ অভিযানে ৯ জন দালালকে আটক করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেককে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
রবিবার (২৯ জুন ২০২৫) সকাল ৭টা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানটি নেতৃত্ব দেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মুরাদ হোসেন। জেলা এনএসআই, পাবনার সরবরাহ করা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যৌথভাবে এ অভিযান চালানো হয়।
দীর্ঘদিন ধরে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা দালালদের হয়রানি, অর্থ আদায় এবং প্রতারণার শিকার হয়ে আসছিলেন। রোগীদের সহজ-সরল মানসিক অবস্থা ও তাদের পরিবারের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে দালালরা চিকিৎসা ও ভর্তি কার্যক্রমকে পণ্যে পরিণত করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক অস্বস্তি তৈরি হলে জেলা প্রশাসনের নজরে আসে এবং অবশেষে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
আটককৃতরা হলেন:
১) মুকাররম (৫০), পিতা-মৃত রফিজ উদ্দিন, কিসমত প্রতাপপুর, পাবনা সদর।
২) মোঃ আলমগীর হোসেন (৩৫), পিতা-মৃত ইসরাইল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা।
৩) হালিম (৪০), পিতা-মৃত জামাল শেখ, ইসলামপুর, পাবনা সদর।
৪) মোঃ জহুরুল ইসলাম (৪২), পিতা-মুনসুর আলী, কিসমত প্রতাপপুর, পাবনা সদর।
৫) মানিক মণ্ডল (২৪), পিতা-আব্দুল লতিফ মণ্ডল, ইসলামপুর, পাবনা সদর।
৬) মোঃ শফিকুল (৫৫), পিতা-মৃত সামাদ শেখ, হেমায়েতপুর, পাবনা সদর।
৭) ছাবিত (১৯), পিতা-শহিদ, হেমায়েতপুর, পাবনা সদর।
৮) মুন্নাফ (৩১), পিতা-মুনজির, হেমায়েতপুর, পাবনা সদর।
৯) জুয়েল (৩০), পিতা-শহিদুল, বুদের হাট, পাবনা সদর।
অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মুরাদ হোসেন বলেন, “জনগণের ভোগান্তি লাঘব এবং সরকারি হাসপাতালের পরিবেশ স্বচ্ছ রাখতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। মানসিক হাসপাতালে ভর্তির নামে কেউ যাতে হয়রানি বা অর্থ আদায়ের সুযোগ না পায়, সে জন্য জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে।”
পাবনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুধু মানসিক হাসপাতাল নয়, জেলার অন্যান্য হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে দালালদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে।
অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ রোগী, স্বজন এবং এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও সন্তোষ প্রকাশ পায়। স্থানীয়দের দাবি, দালালমুক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই কমে আসবে।