আজ মরমী সাধক বাউল শাহ আব্দুল করিমের দশম মৃত্যু বার্ষিকী।।
ডিডিপির শ্রদ্ধা নিবেদন
———-
এম এন সরদার ও মুনমুন আক্তার।। আজ ১২ সেপ্টেম্বর’২১ ভাটি বাংলার মরমী গানের অমর শিল্পী বাউল সাধক শাহ আব্দুল করিমের দশম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৯ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর লেখা ও সুর করা প্রাণ জুড়ানো শত শত গানের মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এদেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। পাশাপাশি সমাজের সব অন্যায়-অবিচার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তাঁর কন্ঠ ছিল আজীবন সোচ্চার। ভাটি অঞ্চলের বিস্তীর্ণ জনপদের মানুষের নানা অনুভূতি আর গল্প উঠে এসেছে মরমী সাধক বাউল শিল্পী শাহ আব্দুল করিমের গানের মাধ্যমে ।
জানা গেছে, বাউল সাধক শাহ আব্দুল করিম সুনামগঞ্জ জেলার ধলআশ্রম গ্রামে ১৯১৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ, দুদ্দু শাহ, পাঞ্জু শাহ’র গান ও দর্শনে অনুপ্রাণিত হয়ে শৈশব থেকেই গানের সাথে তাঁর পথচলা। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করেও নিজের শিল্পী সত্তার বিকাশ ঘটিয়েছেন তিনি। জীবিকার তাগিদে কৃষিকাজও করেছেন দীর্ঘদিন। কিন্তু কোনো কিছুই তাঁকে গান সৃষ্টি করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
স্বশিক্ষায় শিক্ষিত সাধক বাউল শাহ আব্দুল করিম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ শতাশিক গান লিখে সুর করেছেন। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে তাঁর ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। কিশোর বয়স থেকে গান লিখলেও এসব গান শুধুমাত্র ভাটি অঞ্চলের মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ছিল। তাঁর মৃত্যুর কয়েক বছর আগে বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলে তিনি দেশব্যাপী ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। বর্তমানে নামিদামী সব পর্যায়ের শিল্পীদের মুখে মুখেই উচ্চারিত হয় শাহ আব্দুল করিমের গান। তিনি গানে গানে রূপ দিয়েছেন গণমানুষের জীবনের আনন্দ-বেদনা আর প্রেম-বিরহের গল্প। পাশাপাশি সামাজিক অসংগতি, অন্যায়-অবিচার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তাঁর কন্ঠ ছিল আজীবন সোচ্চার। ভাটি অঞ্চলের এই বাউলসাধক তাঁর সাধনার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক, লেবাক এওয়ার্ড, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি সম্মাননাসহ অজস্র পুরস্কার।
২০০৯ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুর থেকেই সিলেটের একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সে সময় তাঁকে লাইফসাপোর্ট দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়। তাঁর পরদিনই ১২ই সেপ্টেম্বর অগণিত ভক্তকূল ও গানপ্রেমীদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন বাউল সাধক শাহ আব্দুল করিম। আজ তাঁর দশম মৃত্যুবার্ষিকীতে ঈশ্বরদীর স্বনামধন্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ডিডিপি মিউজিক একাডেমী ও বাউল সম্প্রদায়ের চেয়ারম্যান সাপ্তাহিক জংসন সম্পাদক ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক কবি কলামিষ্ট গীতিকার সুরকার সমাজ সেবক সংগঠক ও শিল্পী সূফি সাধক গুরুজি এস এম রাজা মহোদয় তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।