ঈশ্বরদীতে মহাসড়কে পুলিশের নামে ভুয়া লেগুনা সমিতির চাঁদা আদায় মাসে ৩৫ হাজার টাকা
স্টাফ রিপোর্টার।।
ঈশ্বরদীতে হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের মামলার ভয় দেখিয়ে দাশুড়িয়া-রুপপুর মহাসড়ক ও ইপিজেড সড়কে চলাচলকারী লেগুনা গাড়ির চালকদের নিকট থেকে মাসোয়ারার নামে প্রতি মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। তবে বিগত সময়ে পুলিশের বেশ কিছু কর্মকর্তা এ চক্রের সাথে জড়িত থাকলেও বর্তমানে কোনো কর্মকর্তা এর সাথে সম্পৃক্ত নয় বলে দাবী পাকশী হাইওয়ে থানার ওসির।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লেগুনার মালিক ও চালক সূত্রে জানা গেছে, পাকশী রুপপুর ও ইপিজেড সড়কে প্রতিদিন প্রায় ৩০ টি লেগুনা গাড়ি চলাচল করে। মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের মামলার ভয় দেখিয়ে পুলিশ ম্যানেজ বাবদ তথাকথিত লেগুনা সমিতির স্ব-ঘোষিত সভাপতি সোহাগ ও সাধারন সম্পাদক আনিচ হোসেন প্রতিটি গাড়ি থেকে প্রতি মাসে ১৩০০-১৫০০ টাকা হাতিয়ে নেন। চালকরা আরো জানান, প্রতিদিন ঈশ্বরদী থানা ও পাকশী ফাঁড়িতে দুইটি লেগুনা ও হাইওয়ে থানায় মাসে একদিন সার্ভিস দিতে হয় তাদের। ওই ২-৩টি গাড়ি চালকদের পুলিশের পক্ষ থেকে শুধু গ্যাস খরচ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে সাধারন চালকদের মাসে ১৩০০-১৫০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয় সমিতির সভাপতি সম্পাদকের কাছে। সেখান থেকে থানায় চলাচলকারী দুই গাড়ি চালককে দৈনিক ২০০-৩০০ টাকা করে দেয় সমিতি। মামলার ভয় দেখিয়ে পুলিশ ম্যানেজের কথা বলে বাকি টাকা সভাপতি -সম্পাদক কি করে তার কোনো হদিস নেই। চালকদের অভিযোগ, থানাগুলোতে লেগুনা গাড়ির সার্ভিস দেয়ার পরও তাদের ম্যানেজ করার কথা বলে সভাপতি ও সম্পাদক আলাদা ১ হাজার টাকা নেন। টাকা না দিলে সমিতির সাধারন সম্পাদক আনিচ দাশুড়িয়া স্ট্যান্ডে গাড়িগুলোকে দাড়াতে দেয় না। স্থানীয় বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতাদের ভয়ও দেখান।
এ বিষয়ে প্রথমে চাঁদা তোলার বিষয়টি অস্বীকার করেন লেগুনা মালিক সমিতির স্ব-ঘোষিত সভাপতি সোহাগ হোসেন। বলেন, ১৩০০-১৫০০ টাকা নেওয়া হয় না। থানা ও ফাঁড়ির গাড়ি চালকদের জন্য প্রতি গাড়ি থেকে ২০০-৩০০ টাকা করে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে তথ্য প্রমাণ দেখালে অতিরিক্ত আরও ৮০০-১০০০ টাকা তোলার বিষয়টিও স্বীকার করেন তিনি। আর সমিতির সাধারন সম্পাদক পরিচয় দেওয়া আনিচ হোসেন বলেন, চাঁদা তোলার বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারবো না। আমরা চাঁদা তো বাহিরের কোনো গাড়ি থেকে তুলতে যায় না। নিজের মধ্যে ১হাজার নেব কি ১৫’শ টাকা নেব সেটা আমাদের বিষয়। এসময় নিউজ প্রকাশ করলে সাংবাদিকের চাকরী খেয়ে নেওয়ার হুমকি দেন সমিতির আরেক সদস্য সাচ্চু হোসেন।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার উপ-পরিদর্শক শরিফুজ্জামান জানান, যে গাড়িগুলো থানা বা ফাঁড়িতে চলে তাদের সার্ভিস চার্জ থানা থেকে দেওয়া হয়। কোনো গাড়ি ফ্রী চলে না। আর ঈশ্বরদী ট্রাফিক ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুদ বলেন, লেগুনা সমিতির সাথে আমাদের কোনো সদস্য যোগাযোগ করে কি না আমার জানা নেই। তবে আমি এ বিষয়ে অবগত নই।
এদিকে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে এ ধরনের অপকর্মের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পাকশী হাইওয়ে থানার পরিদর্শক মনোয়ার হোসেন জানান, চলতি মাসেই এ থানায় নতুন যোগদান করেছি। যতদূর জানি এসব সমিতির সাথে হাইওয়ে থানা পুলিশের কোনো সম্পৃক্তা নেয়।বিষয়টি খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।