কবে হবে সীমাহীন কষ্টের অবসান
——–এস এম রাজা
ষাট পেরিয়ে এখন
সত্তুরের কোঠায় বয়সে
অবসরে গিয়ে আয়েশ করে
সময় কাটানোরই কথা
অথচ যৌবনের প্রারম্ভে
পিতার বাধ্য অনুগত হবার পুরস্কার হিসেবে
জীবন থেকে হারিয়ে গেল
স্বর্ণ সময় প্রায়ই একটি যুগ
সমাধি রচিত হলো
তরতাজা এক যুবকের স্বপ্ন সাধ
আবার মৃত্যুপথযাত্রী ওই বাবার
শেষ সাধটুকু পূরণের নিমিত্তেই
চরম অসময়ে ধরতে হলো
সংসার নামক যাতনার নিষ্ঠুর হাল
সামাজিক প্রতিষ্ঠা লাভ
মর্যাদার আসনে উপবিষ্ট হওয়ার অদম্য প্রচেষ্টা
সংসার নামক হিমালয়ের বোঝাটানা
রাতদিন পরিশ্রমে একাকার
লক্ষ্য অর্থ উপার্জন
শূন্য থেকে শুরু
প্রায় তিন যুগের হালটানা
বংশের প্রদীপদ্বয়ের উচ্চতর ডিগ্রী প্রাপ্তি
নতুন আঙ্গিকে আবাসনের সুব্যবস্থা
এসবই সম্পন্ন করা কেবল অলিখিত দায়বদ্ধতায়।
কি নিষ্ঠুর নিয়ম প্রকৃতির
ছায়া হারিয়ে বটবৃক্ষের
কেবলই নিষ্ঠুরতা সর্বত্র
পথের ঠেলা পেরে চলা দেহটায়
কারো মায়াবী দৃষ্টি যেন পড়ে না এক নজর।
এসি ঘরে বসে
ফরমায়েশি আহারে তৃপ্ত হওয়া আর
রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে রাত জেগে
ঘাম ঝরানো উপার্জিত অর্থ
চোখের পলকে পকেট থেকে হাতিয়ে নেওয়া
বর্বরোচিত কথোপকথন আর অমানবিক নিষ্ঠুর আচরণ
এ যেন পূর্ব জনমেরই কৃতকর্মের চরম প্রায়শ্চিত্ত
কেবলই মিথ্যাচার অশ্লীল বাক্য প্রয়োগ
কূটকৌশলে কুপোকাত করার নিরলস প্রচেষ্টা
এইসবই অসময়ে অকালে বিদায়ের পথ সুগম করা। অর্থ-সম্পদ বড়ই সুমিষ্ট, দুর্গন্ধহীন
কেবল অর্থবিত্তের স্রষ্টা
বয়বৃদ্ধ মানুষটিই কেবল ভীষণ দুর্গন্ধযুক্ত।
মানুষটি বয়বৃদ্ধ তথাপি উপার্জনে সক্ষম
তাই-ই এত নিষ্ঠুরতা
যখন শক্ত সামর্থ দেহখানা
সামর্থ্য হারাবে নিজ পায়ে চলার
ক্ষমতা হারাবে নগদ উপার্জনের
তখন না জানি কি হয় তার পরিণতি
সংসার নামক নরকখানায়।
চিরসুন্দর এই প্রকৃতির মাঝে
সুখালয় গুলো কেন
স্বার্থ নামক বিষাক্ত ছোবলে ধ্বংস হয়
কেবলমাত্র পরম স্রষ্টা ব্যতীত আর
কারোই জানবার কথা নয়।
কে জানে কবে
জাগ্রত হবে বিবেক মানুষের
জয় হবে মানবতার
ফিরে আসবে কবে সংসারে সংসারে
হাজারো পিতা নামক
অভাগার প্রাপ্য সুখ স্বাচ্ছন্দ
হবে সীমাহীন কষ্টের অবসান।