পাইলস
পৃথিবীতে মানুষের পুরনো রোগ সমূহের মধ্যে অন্যতম রোগ হচ্ছে পাইলস! যা হাজার বছর ধরে বহমান। পাইলস বলতে আমরা বুঝি – মলদ্বারের ভেতরে ফুলে ওঠা রক্তের শিরার মাংসপিন্ড বা কুশন। রক্তের শিরার মাংসপিন্ড বা কুশন সব মানুষেরই রয়েছে। পাইলস বা হেমরয়েড আমরা তখনই বলি যখন এটি কোন উপসর্গ স্মৃষ্টিকরে।যেমন – মলদ্বারের বাইরে ঝুলেপড়া মাংসপিন্ড অথবা রক্ত যাওয়া।
সাধারণত ৩০-৬০ বছর বয়সের মানুষের এই রোগ প্রবনতা বেশি। মাত্রারিক্ত অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাত্রায় টিনএজার দেরও পাইলস দেখা দিতে পারে।
পাইলসের প্রকৃত কারণ উদঘাটিত হয়নি। আনুষাঙ্গিক কারণ সমূহের মধ্যে রয়েছে – মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত কোঁত দেয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, স্থুলতা, নিয়মিত ভারী মালপত্র বহন করা, অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাত্রা, অধিক রাত্রী জাগরণ, আঁশযুক্ত খাবার না খাওয়া, তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার বেশি খাওয়া ইত্যাদি। এছাড়া বংশগত ও হরমোনের প্রভাবও রয়েছে।
উপসর্গ অনুযায়ী পাইলস দুই প্রকার। বহিঃস্তিত ও অভ্যন্তরীন।
বহিঃস্তিত পাইলস- এ ক্ষেত্রে মলদ্বারের বাইরে ফোলা থাকে এবং কিছুটা ব্যথা বা অস্বস্তি হতে পারে। অভ্যন্তরীন পাইলস- টয়লেটে টকটকে লাল রক্ত দেখা যায়, কোন রুপ ব্যাথা থাকেনা।মলত্যাগের শেষে রক্ত যায়। প্রথমত বছরে দুইবার এর পর দুই মাসে একবার, এরপর প্রতি মাসে একবার এই লক্ষণ দেখা যায়। তবে রক্ত গেলেই শুধু পাইলস হয়না,এক্ষেত্রে -এনাল ফিশার,পলিপ,ক্যানসার,ফিস্টুলা,আলসারেটিভ কোলাইটিস,রেক্টাল প্রলাপস হতে পারে। সঠিক রোগ নিরনয়ের ক্ষেত্রে প্রকটস্কপি ও সিগময়ডস্কপি পরীক্ষা করা জরুরী।
পায়ু দ্বার সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা হলে প্রথমেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।প্রথম পর্যায়ে সামান্য কিছু ঔষধ ও পরামর্শ মেনে চললেই আয়ত্তে রাখা সম্ভব। অসুখের মাত্রা বাড়া বাড়ি পর্যায়ে গেলে শল্যচিকিৎসা ছাড়া উপায় নেই।
লাইফস্টাইলের পরিবর্তন করা,নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করা,আঁশযুক্ত সবজি নিয়মিত খাওয়া, রাত্রে ৬/৭ ঘন্টা ঘুমানো এই রোগ তথা পাইলস নিরাময়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
হোমিওপ্যাথি মতে- সিফিলিনাম, নাক্স-ভম,লাইকোপোডিয়াম,সালফার, ব্রায়োনিয়া,মার্ক- সল,হাইড্রাসটীস প্রভৃতি ঔষধ লক্ষ্মণুযায়ী অথবা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে সেবনে আরোগ্য লাভ হয়।
ডা. মোঃ আরিফুল শরীফ রাজা
বিএইচএমএস- ঢা.বি
অধ্যক্ষ
শামসুর রহমান শরীফ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ঈশ্বরদী।