মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ ::
ঈশ্বরদীতে মটর সাইকেল চোর চক্রের ২ সদস্য গ্রেফতার পাবনা মানসিক হাসপাতালের ৯ দালালের কারাদণ্ড ঈশ্বরদীতে সাপের কামড়ে সাপুড়ের মৃত্যু ঈশ্বরদীতে ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি পালন ঈশ্বরদীতে সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু প্রয়োজনে পদ ছেড়ে কর্মী হয়ে দলের জন্য কাজ করতে হবে–মকলেছুর রহমান বাবলু ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী নিহত, স্ত্রী পুত্র ও কণ্যা আহত ঈশ্বরদীর সাঁড়াঘাট এলাকার পদ্মা নদীতে পুলিশি অভিযানে ২টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ৮ রাউন্ড গুলিসহ ০৬ জন গ্রেফতার ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মা মেয়েসহ নিহত- ৩, আহত- ১ ঈশ্বরদীর পশু হাটগুলোতে আমদানি প্রচুর, ক্রেতা নেই আশানুরূপ হতাশ খামারি ও ব্যবসায়ী

শেষ পর্যন্ত কেউ আপন হলো না মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া ছেলেটির!!!

ডিডিপি নিউজ ২৪ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : বুধবার, ১০ মে, ২০২৩

মুলাডুলিতে ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে আহত সেই অজ্ঞাত শিশুটি মৃত্যু বরণ করেছে

ঈশ্বরদী ( পাবনা)প্রতিনিধি
ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে আহত সেই অজ্ঞাত শিশুটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু বরণ করেছে।

বুধবার ১০ মে রাত ১.৩০ মিনিটে  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু আইসিইউ ইউনিটে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ প্রধান ডা: আবু হেনা মোস্তফা কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার ৪ মে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার গোগ্রাম ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের নাজমুল হক নামের এক ব্যক্তি আহত ছেলেটিকে নিজের বলে দাবী করেছিল। কিন্তু গতকাল রাত ১২ টার সময় নাজমুল হক তাদের সন্তান ফিরে এসেছে জানিয়ে পুনরায় ছেলেটিকে অজ্ঞাত পরিচয়হীন বলে রামেকে রেখে যান। পরে রাত ১ টা ৩০ মিনিটে ছেলেটি মৃত্যু বরণ করে।

নাজমুল হক কে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, আমরা গত ৪ মে থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছিলাম। যে ছেলেটিকে আমাদের মনে করেছিলাম সে আসলে আমাদের ছেলে নয়। আমাদের ছেলেকে খুঁজে পেয়েছি।

আপনারা ৪-৫ ছেলেটির সাথে থেকেও চিনতে পারেন নাই সে আপনাদের সন্তান নয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আহত ছেলেটির চেহারা অবিকল আমাদের ছেলে মত। আহত ছেলেটিকে যখন সিটি স্ক্যান করার জন্য আইসিইউ থেকে বাহিরে আনা হয় পরিবারের অন্যান্যরাও চিনতে পারেনি যে এটা ইয়ামিন (নাজমুল হকের আসল ছেলে) না।

আপনাদের সন্তানকে কিভাবে ফিরে পেলেন এ প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হক বলেন, যখন আমাদের এলাকার সবাই জানতে পারে যে আমার ছেলেকে খুঁজে পাওয়া গেছে এবং সে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে তখন অনেকে জানাই আমার ছেলেকে মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে দেখেছে। সে সকল তথ্যানুযায়ী খোঁজ করলে আমার ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যায়।

এর আগে নাজমুল হক গোদাগাড়ী থানায় ছেলে হারিয়ে গেছে জানিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম হারানো ছেলেটিকে ফিরে পাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, হারানো ছেলেটিকে যে পরিবার ফিরে পেয়েছে এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জানানো হয়নি।

গোদাগাড়ী প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ পরিদর্শক বিনয় কুমার জানান, ছেলেটিকে ফিরে পেয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজের চাপে ওসি স্যারকে বিষয়টি অবগত করা হয়নি ।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানাই, সকল প্রকার প্রচেষ্টা সত্বেও শেষ পর্যন্ত নাম পরিচয়হীন শিশুটিকে বাচানো সম্ভব হলো না। ইতিপূর্বে যে কয়জন নিজেদের বাচ্চা বলে দাবী করে ছিলেন, সবাই শেষ পর্যন্ত তাদের বাচ্চা নয় বলে জানিয়ে চলে গেছেন।  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু আইসিইউ তে মৃত্যু বরণ করা  বাচ্চাটির এখন পর্যন্ত কোন অভিভাবক পাওয়া যায়নি। সে কারনে, হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে এবং আজ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকল ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

“আপনাদের কারো পরিচিত হলে অবিলম্বে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে যোগাযোগ করতে পারেন” বলে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ২ মে অজ্ঞাত ছেলেটি ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নে দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা সেখান থেকে ছেলেটিকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে ছেলেটির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ছেলেটিকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

তখন অজ্ঞাত ছেলেটির উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী পাঠানোর ব্যবস্থা করেন ও প্রয়োজনীয় ঔষধ কিনে দেন ঈশ্বরদী পুলিশ ফাড়ির উপ পরিদর্শক সেলিম রেজা, যায়যায়দিনের ঈশ্বরদী উপজেলা প্রতিনিধি খালেদ মাহমুদ সুজন ও দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ’র নিজেস্ব প্রতিনিধি সৌরভ কুমার দেবনাথ, সেচ্ছাসেবী সংগঠন ঈশ্বরদীয়ানের এডমিন শফিকুল ইসলাম জয়।

পরে ছেলেটিকে অজ্ঞাত পরিচয়হীন হিসেবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারী ওয়ার্ড হয়ে শিশু আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং শিশু আইসিইউ নিজস্ব জাকাত তহবিল থেকে  চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

ছেলেটির মৃত্যুতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright 2020 © All Right Reserved By DDP News24.Com

Developed By Sam IT BD

themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!