মানুষের জন্য চিকিৎসায় নতুন ইতিহাস, পুরুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হলো নারীর হাত
চিকিৎসায় নতুন ইতিহাস গড়ল দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতাল। প্রথমবারের মতো হাত প্রতিস্থাপন করেছেন এখানকার চিকিৎসকেরা। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার দীর্ঘ অপারেশনে এ অসাধ্য সাধন করেছেন তারা। বুধবার সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
একটি দুর্ঘটনায় দুই হাত হারানো এক ব্যক্তির শরীরে নারীর হাত প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ভারতবর্ষের রাজধানী নয়াদিল্লির একদল চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে এ কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। কেবল তাই নয়, ওই নারীর অঙ্গদানের মাধ্যমে প্রাণ ফিরে পেয়েছে চারজন মানুষ।
৪৫ বছর বয়সী ওই পুরুষের মাধ্যমে দিল্লিতে প্রথমবারের মতো সফলভাবে হাত প্রতিস্থাপিত হয়েছে। আগামীকাল তাকে দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে। তিনি ২০২০ সালে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিজের দুহাত হারিয়েছিলেন।
এনডিটিভি জানিয়েছে, অঙ্গদানকারী ওই নারীর নাম মিনা মেহতা। তিনি দক্ষিণ দিল্লির একটি স্বনামধন্য স্কুলের সাবেক প্রশাসনিক প্রধান ছিলেন। চিকিৎসকরা তাকে ব্রেইন ডেথ ঘোষণা করেন। মৃত্যুর আগে তিনি অঙ্গদান করে গিয়েছিলেন।
মেহতার এ অঙ্গদানের ফলে চারজনের জীবনে আলো ফিরেছে। এরমধ্যে তার কিডনি লিভার ও কর্নিয়া অন্য তিনজনের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া তার হাত অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে ইতিহাস গড়েছেন চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাত প্রতিস্থাপনের জন্য ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অপারেশন করেছেন। এ সময়ে দাতা ও গ্রহীতার দুজনের হাতের প্রতিটি ধমনী পেশী, টেন্ডন ও স্নায়ুকে জোড়া লাগানো হয়েছে। দাতার থেকে নেওয়া হাত প্রতিস্থাপনকারীর শরীরে মিলেও গেছে। নতুন দুই হাত দিয়ে এখন সব কাজই করতে পারবেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা ওই ব্যক্তি পেশায় চিত্রশিল্পী ছিলেন। ট্রেন দুর্ঘটনায় আরও কোনোদিন রঙ তুলি ধরতে পারবেন না এমন ভেবে অবসাদে চলে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে অঙ্গদানের মাধ্যমে জীবন তাকে নতুন সুযোগ দিয়েছে। চিকিৎসকদের দক্ষতায় নতুন করে দুই হাত ফিরে পেয়েছেন তিনি। ফলে আবারও ফিরতে পারবেন রঙতুলির জগতে।