দীর্ঘ ১ বছর ৩ মাসের অধিক কালেও অপহৃত নিশানের সন্ধান মেলেনি
———
ঈশ্বরদী থেকে এস এম রাজা।। দীর্ঘ প্রায় ১ বছর ৩ মাসেরও অধিক কাল সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও নিখোঁজ ইমরান হোসেন নিশান (১৮)’র কোন সন্ধান মেলেনি। ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের পোড়ার দাঁইড় গ্রামের মৃত আব্দুল বারী সরদারের ছেলে নিশান গত ১৯ আগষ্ট’২৩ বিকেলে নিজ বাড়ি থেকে ছিলিমপুর মোড়ে যাওয়ার কথা বলে বের হয় কিন্তু সে আর বাড়িতে ফেরেনি। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পরিবারের লোকজন আত্মীয় স্বজনের বাড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুঁজি করে তার কোন সন্ধান মেলেনা। এক পর্যায়ে তারা জানতে পারে যে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিবেশী তুহিন,শাহীন ও শামীম গং নিশানকে ছিলিমপুর-দাশুড়িয়া রোডের চড় ছলিমপুর ফাঁকা রোডের উপর থেকে জোরপূর্বক অপহরণ করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে চলে যায়। এই সংবাদ জানার পর নিশানের মা মোছাঃ সাবিনা খাতুন (৪২) ঈশ্বরদী থানায় এব্যাপারে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ না করে একটি সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। সে মোতাবেক সাবিনা খাতুন ২১ আগষ্ট’২৩ ঈশ্বরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করেন। কিন্তু থানা পুলিশ আইনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে আদালতে মামলা করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। সাবিনা খাতুন নিরুপায় হয়ে তার নিখোঁজ ছেলেকে উদ্ধারের জন্য ১১ সেপ্টেম্বর’২৩ পাবনার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী ২ নং আদালতে ঘটনা প্রত্যক্ষকারী সাক্ষীদের ভাষ্যানুযায়ী সন্দিগ্ধ ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে, যার নম্বর সিআর ১৬২/২০২৩ ঈশ্বরদী। এরপর বিজ্ঞ আদালত বিষয়টি তদন্ত পূর্বক রিপোর্ট দাখিলের জন্য ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব প্রদান করেন। কিন্তু অদ্যাবধি ডিবি পুলিশ এবিষয়ে কোন রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেননি বলে মামলার বাদী নিখোঁজ নিশানের মা সাবিনা খাতুন জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে এই মামলাটি পরিচালনা না করে আসামীদের সাথে মিমাংসা করে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এতে তিনি প্রচন্ড হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে সাংবাদিকদের দারস্থ হয়েছেন। তার একটাই দাবী নিখোঁজ বা অপহৃত ছেলে নিশানকে জীবিত উদ্ধার করে দেয়া অথবা যদি তাকে আসামিরা হত্যা করে থাকে তাহলে তার লাশ কোথায় গুম করা হয়েছে সেই বিষয়ে নিশ্চিত জেনে প্রয়োজনীয় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। ছেলে হারা জননীর প্রশাসন সহ সর্ব মহলের কাছে স্বকরুণ একটায় আর্তি আমার পিতৃহারা ছেলে নিশানকে আমার কোলে ফিরিয়ে দেয়া হোক।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কে দেবে ফিরিয়ে সাবিনা খাতুনের পিতৃহারা ছেলে নিশানকে? পুলিশ প্রশাসন কি এই দায়িত্ব নেবে? নাকি বিষয়টি অজ্ঞাত কারণে এড়িয়ে যাবেন?