ঈশ্বরদীতে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা জনতা ব্যাংক ম্যানেজার
——
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি।। ঈশ্বরদীর পাকশীস্থ জনতা ব্যাংক পিএলসি’র ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লাহ’র বিরুদ্ধে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (৫ অক্টোবর’২৫) দুপুরে ঈশ্বরদীতে।
জনতা ব্যাংক ও ঈশ্বরদী থানা সূত্রে জানা গেছে, জনতা ব্যাংক পাকশী শাখার ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লাহ গত শনিবার (৪ অক্টোবর’২৫) ঈশ্বরদী কর্পোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোঃ মোহছানাতুল হকের নিকট মোবাইল ফোনে জানান যে, পরেরদিন রবিবার তার ব্যাংকের নিজ শাখার জন্য ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে। এই টাকা যেনো দেয়ার জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়। তখন মোহছানাতুল হক ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা দেয়া সম্ভব বলে জানান। একথার পরেও পুরো টাকাটায় দেয়ার ব্যবস্থা করার জন্য খালেদ সাইফুল্লাহ তাগিদ দেন।
সেই মোতাবেক পরেরদিন রবিবার বেলা ১১ টা ৩৫ মিনিটে জনতা ব্যাংক ঈশ্বরদী কর্পোরেট শাখা থেকে নগদ ১ কোটি টাকা গ্রহণ করেন। এর আগে সোয়া ১১ টার দিকে জনতা ব্যাংক দাশুড়িয়া শাখা থেকে ৩০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন খালেদ সাইফুল্লাহ।
সমস্ত বিধিবিধান মেনে মোট ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা নিয়ে জনতা ব্যাংক পাকশী শাখার ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লাহ ঈশ্বরদীস্থ জনতা ব্যাংকের কর্পোরেট শাখা থেকে সাড়ে ১২ টার দিকে রওনা দেন নিজ শাখার উদ্দেশ্যে।
এসময় তার সাথে গানম্যান হিসেবে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন আনসার সদস্য মাহবুব হোসেন। যে প্রাইভেটকারে তিনি ঈশ্বরদী থেকে পাকশী গমন করেন সেই গাড়ির চালক ছিলেন মোঃ ইসমাইল হোসেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পাকশীতে পৌঁছানোর সাথে সাথে ফোন করে ঈশ্বরদী কর্পোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপককে পৌঁছানোর সংবাদ জানানোর কথা থাকলেও তিনি ফোন করে জানাননি।
বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জনতা ব্যাংকের পাকশী শাখায় ফোন করলে সহকারী ম্যানেজার জানান, ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লাহ তখনও পৌঁছাননি। এসংবাদ শোনার পর সংশ্লিষ্ট সকল ব্যাংক কর্মকর্তারা আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েন।
বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে তারা পদ্ধতিগত ভাবে আইনের আশ্রয় নিতে বলেন। সেই মোতাবেক জনতা ব্যাংক পিএলসি ঈশ্বরদী কর্পোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোঃ মোহছানাতুল হক ঈশ্বরদী থানায় প্রাথমিকভাবে একটি জিডি করেন। সে মোতাবেক তারা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ আ স ম আব্দুন নূরকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি আমরা শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে, এই বিষয়ে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার জানান, ব্যাংক ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লাহ সুকৌশলে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার প্রাথমিক নমুনা পাওয়া গেছে। তার ব্যক্তিগত দায় দেনা পরিশোধ করার জন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের জমাকৃত এই টাকা সুকৌশলে তিনি ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।
বিষয়টি দুদককে জানানো হয়েছে, তারা তদন্তের মাধ্যমে চূড়ান্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এবিষয়ে জানার জন্য জনতা ব্যাংক পাকশী শাখার ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লাহকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে, ব্যাংক ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লার প্রকাশ্য দিবালোকে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ-এর ঘটনাটি টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।
প্রেরকঃ এস এম রাজা
ঈশ্বরদী, পাবনা।