ঈশ্বরদীতে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত-৯
ঈশ্বরদী(পাবনা)প্রতিনিধি।। পাবনার ঈশ্বরদীতে শিশুদের ঝগড়া ও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বড়দের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৯ জন গুরুতর আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গতকাল শুক্রবার(১২ ডিসেম্বর’২৫) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চরকুড়ুলিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে কয়েক দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের পর পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী থানার ওসি মোঃ মমিনুজ্জামান।
শনিবার(১৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চরকুড়ুলিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মমিন বিশ্বাসের ছেলে আমির হামজার(৪) সঙ্গে প্রতিবেশী জিয়ারুল শেখের ছেলে সাজিমের(৫) খেলাধুলার সময় ওয়ান টাইম প্লেট ভাঙ্গা নিয়ে ঝগড়া ও মারামারি হয়। এসময় আমির হামজার মা রুবিনা খাতুন তাদের ঝগড়া থামাতে গেলে শিশু সাজিম তাকেও গালমন্দ করে মারতে আসে। এসময় আমির হামজার বাবা মমিন বিশ্বাস এগিয়ে গিয়ে উভয়কে ধাক্কা দিয়ে আলাদা করে দেন। তখন শিশু সাজিম পড়ে গিয়ে পায়ের হাঁটুতে সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হলে তাৎক্ষণিক তার চাচাতো ভাই রিপন ও তার স্ত্রী মোছাঃ শান্তি খাতুন এসে আমির হামজার বাবা-মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এসময় তারা গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে আমির হামজার মা রুবিনা খাতুনকে মারধর করা হয়। পরে মারধরের বিষয়টি জানাতে এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের কাছে যান শিশু আমির হামজার মা রুবিনা খাতুন। এটি বসে সমাধান করা হবে বলে জানানো হয় তাকে। কিন্তু হটাৎ করে অপর পক্ষ শিশু সাজিমের বাবা জিয়ারুল শেখ, চাচা বিল্লাল শেখ, টিপু শেখ, পুলান শেখ ও তার চাচাতো ভাই রিপনসহ ১০-১৫ জনের একটি গ্রুপ লাঠিসোঁটা নিয়ে শিশু আমির হামজার দাদার বাড়িতে এসে অতর্কিত হামলা ও ভাংচুর চালায়। এসময় ওই বাড়িতে থাকা আমির হামজার চাচাতো ভাই তিন বছরের আরেক শিশু সহ ৫ জন গুরুতর আহত হন। পরে আশেপাশের লোকজন অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। আহতরা সবাই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর মধ্যে শিশু আমির হামজার চাচা মোঃ মিজানের ৩ বছরের শিশু মোঃ মুস্তাকিম চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়াই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে(আইসিইউ) ভর্তি রয়েছে।
শিশু আমির হামজার মা মোছাঃ রুবিনা খাতুন বলেন, বাচ্চাদের সামান্য ঝগড়া করা নিয়ে তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে আমার শশুরবাড়ির লোকজনের উপর হামলা করেছে। তারা ছোট্ট শিশুকেও ছাড় দিলনা। তার তো কোন দোষ ছিলনা তবে তাকেসহ অন্যদের কেন মারধর করা হলো। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
হামলা ঠেকাতে এসে আহত হন স্থানীয় এনামূল হক। তিনি বলেন, শিশুদের ঝগড়া ও মারামারি থেকে বড়দের এমন সংঘর্ষের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমি ঠেকাতে এসে আমাকেও অপর পক্ষ শিশু সাজিমের বাবা-চাচারা মেরে আহত করেছে।
তবে এ ঘটনার বিষয় জানতে ও বক্তব্য নিতে শিশু সাজিমের বাবা জিয়ারুল শেখের বাড়িতে গেলে কাউকেই পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার ওসি মোঃ মমিনুজ্জামান বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনও কোন পক্ষ থেকেই লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।