স্টাফ রিপোর্টার।।
পাবনার ঈশ্বরদীতে ৩৩ হাজার ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক লাইনের পাশে অপরিকল্পিত ভাবে নির্মানাধীন বহুতল ভবনের ছাদ থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সৌরভ সরদার (১৫) নামে এক কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে ঢাকায় জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত সৌরভ ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর মধ্যপাড়া আনসার মাঠ সংলগ্ন এলাকার শাহান সরদারের ছেলে।
জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের জয়নগর বোর্ড অফিসের অদূরে বিশ্বরোড সংলগ্ন রাস্তার পাশে একটি অপরিকল্পিত বহুতল ভবন নির্মান করেছেন লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের আসাদ হোসেন নামে এক ব্যাক্তি। ওই নির্মানাধীন মার্কেটের গরিবের নেওয়াজ হোন্ডা ওয়াশিং নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো নিহত কিশোর সৌরভ। গত বৃহস্পতিবার বিকালে ওই ভবনের ছাদ থেকে অসাবধানতাবশত ৩৩ কেভি বৈদ্যুতিক তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঝলসে যায় সে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ঢাকায় জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্টের কারণে সৌরভের দেহের অধিকাংশই পুড়ে গিয়েছিলো।
এদিকে ওই ভবনটির মালিক আসাদ হোসেন অপরিকল্পিতভাবে বহুতল ভবন নির্মানের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, দূর্ঘটনা তো দূর্ঘটনায়। অন্যকোনোভাবেও মৃত্যু হতে পারতো, তখনও কি আমার ভবনের দোষ হতো। আমার কোন দায়বদ্ধতা নেই তারপরও আমি নিহতের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানিয়ে এসেছি।
আর ওই মার্কেটের গরিবের নেওয়াজ হোন্ডা ওয়াশিং এর পরিচালক পলাশ মাহমুদ জানান, সৌরভ অনেকদিন ধরে আমার এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো। তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমি বাকরুদ্ধ। ঘটনার সময় আমি সেখানেই উপস্থিত ছিলাম এবং সাথে সাথেই তাকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৩৩ হাজার ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক লাইনের মাত্র দুই থেকে তিন ফিট দূরত্বে বহুতল বিশিষ্ট ওই ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সৌরভের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে অপরিকল্পিত নির্মানাধীন ওই ভবন মালিককে দুষছেন এলাকাবাসী। সৌরভের মতো আর কোন মানুষের জীবন যেন এই অপরিকল্পিত ভবন কেড়ে না নেয়, সেজন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।