ঈশ্বরদীতে বিশ্রামাগার থেকে প্রকৌশলীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
ঈশ্বরদী(পাবনা)উপজেলা সংবাদদাতা।।
পাবনার ঈশ্বরদীতে জিএমডি আওতাধীন ২৩০ কেভি বিদ্যুৎ গ্রীড উপকেন্দ্রেরের বিশ্রামাগার থেকে শামীম হোসেন (২৫) নামে এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ বুধবার (২৩ শে এপ্রিল’২৫) সকালে পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের জয়নগর শাখার বিশ্রামাগারের দোতলা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত প্রকৌশলী শামীম চুয়াডাঙ্গা সদর থানার শৈলগাড়ী এলাকার মসলেম উদ্দীনের ছেলে।
জয়নগর পিজিসিবির উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোবিন্দ জানান, রাতে ডিউটি করে সকাল ৯ টায় আমি বিশ্রামে আসি। এর মধ্যে অফিস থেকে ফোন করে বলেন যে আপনার পাশের রুমে শামীম মোবাইল ফোন কল ধরছে না। আপনি দেখেনতো রুমে কি করে? আমি গিয়ে তাকে অনেক ডাকা ডাকি করি কিন্তু তার কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে আমি আবার বিশ্রামে চলে যায়। অফিস থেকে আবার ফোন করে বলেন যে, আপনি আবার শামীমের রুমে গিয়ে দেখেন এখনো কেন ডিউটিতে আসছে না। এমনও হতে পারে সে বাথরুমে ছিল আপনার ডাক শুনতে পায়নি । আমি পুনরায় শামীমের রুমের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজায় ধাক্কা দিয়ে দেখি দরজা ভিড়ানো। দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখি শামীম সিলিং ফ্যানের সঙ্গে তার ব্যবহৃত গামছা দিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি আমি কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা দ্রুত শামীমের রুমের সামনে এসে মরদেহ দেখে শামীমের পরিবার এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। তিনি আরো জানান, কর্মস্থলে শামীম ভাইকে দুইদিন যাবত মন খারাপ এবং অসুস্থ মনে হচ্ছিল। তাকে অনেকবার জিজ্ঞাসা করিছি আপনার শরীর খারাপ কিনা কিন্তু তিনি আমাদের কাছে কিছুই বলেননি।
জিএমডি ঈশ্বরদী শাখার প্রশাসনিক সহকারী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, নিহত প্রকৌশলী শামীম হোসেন পাওয়ার গ্রীডের ঢাকাস্থ (পিএনডি) নিরাপত্তা অনুশাখা থেকে গত ২১ এপ্রিল ঈশ্বরদী জিএমডি শাখায় যোগাদান করেছেন। সঠিক কি কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা কেউ জানেন না।
নিহত শামীমের বাবা মসলেম উদ্দীন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে মানসিক দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। এর আগে বগুড়ায় বিভাগীয় প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকালে একাধিকবার চাকরী থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছিল সে। তিনি আরো বলেন গতকালকে ঈশ্বরদী অফিস থেকে ফোন করে আসতে বলেন, আমি বলি কালকে তো আমি ঈশ্বরদী অফিস থেকে বাসায় আসছি এখন আমি যেতে পারবো না কাল সকালে ট্রেন আছে আমি সেই ট্রেন আসবো।আসলাম ঠিকই কিন্তু এসে ছেলেকে জীবন্ত পেলাম না, ছেলের মৃতদেহ দেখতে পেলাম। ছেলের মৃত্যুর কারণ হিসাবে তার বাবা বারবার ডিপ্রেশনের কথা বলছিলেন। কি কারনে তার ছেলে ডিপ্রেশনে ছিলেন সে কারণটি তার বাবা বলেন নি। বলেছেন ডিপ্রেশনের কারণে আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিহতের পরিবারের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।