ঈশ্বরদীতে পৃথক পৃথক সংঘর্ষে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ৫ জন আহত
ঈশ্বরদী উপজেলা সংবাদ দাতা।। ঈশ্বরদীতে পৃথক পৃথক সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার( ৭ নভেম্বর’২৪) দুপুরে ও সন্ধ্যায় এসকল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুপুরের সংঘর্ষে আহতরা হলেন- ঈশ্বরদী পৌরসভার বকুলের মোড় আমিন পাড়ার আব্দুল মজিদ চাঁদের ছেলে সালমান (১৯), বকুলের মোড় আমিন পাড়া মাঠ পাড়ার মোঃ শহিদুল প্রামানিকের ছেলে সুরুজ (২৪) ও সুলতান (১৮)।
আহত সালমান স্হানীয় আকবর হাজীর আটার মিলের শ্রমিক এবং সুরুজ ও সুলতান শাটার মিস্ত্রি।
আহতরা সকলেই বিএনপি’র কর্মী এবং ছাত্র দল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়নের সাথে রাজনীতি করে বলে জানিয়েছে। অপরদিকে হামলাকারীরাও রফিকুল ইসলাম নয়ন সমর্থিত বিএনপি কর্মী।
হামলার শিকার আহতরা জানায়, নির্জন, বিশাল, নিলয়, শাওন, পারভেজ সহ ৫-৭ জন পাবনা থেকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের প্রোগ্রাম শেষ করে ঈশ্বরদীতে ফিরে বাস থেকে নামার পরপরই আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এর আগে সকালে ঈশ্বরদীতে প্রোগ্রাম চলাকালীন সময়েও ওরা আমাদের পিছন থেকে মাথায় মেরেছিল। আমরা সেসময় প্রতিবাদ করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তখন রফিকুল ইসলাম নয়ন এসে সবাইকে শান্ত করে।
আহতরা আরও জানায়, হামলাকারীরা সকলেই আগে আওয়ামীলীগ করতো। এখন প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সাথে সাথে রফিকুল ইসলাম নয়নের মাধ্যমে বিএনপিতে যোগ দিয়েছে। ওরা গতমাসেও আমাদের উপর হামলা করেছিল। আমরা নয়নের কাছে আগেও বিচার দিয়েছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। এখন আবারও হামলা করলো। নয়নকে বিষয়টি জানালে সে ব্যাবস্হা গ্রহণের আশ্বাস দেয়। থানা পুলিশ এসে আমাদের দেখে চলে গেছে।
এবিষয়ে রফিকুল ইসলাম নয়ন জানায়, এটা কোন রাজানৈতিক দ্বন্দ নয়। ওরা সবাই আমাদের এলাকার ছেলে। ব্যক্তিগত ভুল বোঝাবুঝিতে মারামারি হয়েছে।
আর হামলাকারীরা আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সে জানায়, ৫ আগষ্টের আগের অবস্থা তো সবারই জানা। স্কুলের ছেলেদেরও জোর করে ধরে নিয়ে যেত আওয়ামীলীগের প্রোগ্রামে।
এছাড়াও রাতে শহরের আকবরের মোড়ে একদল দুর্বৃত্তরা ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি প্রিন্স মাহমুদ (৩৫) কে বেধড়ক পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
প্রিন্স মাহমুদ পৌর ৪নং ওয়ার্ডের মশুড়িয়া পাড়া এলাকার মোঃ গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। প্রিন্সের পিতা ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি। গিয়াস উদ্দিনকে গতকাল পুলিশ ঈশ্বরদী বাজার থেকে গ্রেফতার করেছে।
বিএনপি’র নয়ন গ্রুপের সন্ত্রাসীরা আমার ছেলেকে মেরেছে বলে দাবী করেন প্রিন্সের মা।
অপরদিকে, সন্ধ্যায় ঈশ্বরদী খাদ্য গুদামের সরদার মোঃ আশরাফ আলী (৪৫) কে চাঁদা না দেওয়ায় পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে এক দল সন্ত্রাসী।
মোঃ আশরাফ আলী হামলাকারীদের নামে থানায় একটি অভিযোগ জমা দিয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, নসিব, সাকিব, নাজমুল, রাজা নামের কয়েকজন আওয়ামীলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী তার কাছে বেশ কিছুদিন যাবৎ চাঁদা দাবি করছিল। চাঁদা না দেওয়ায় আজ সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার চেষ্টা করে।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম শহিদ জানায়, পৃথক পৃথক জায়গায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। থানায় আশরাফ নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ দিয়েছে। আর কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসে নাই। অভিযোগ আসলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।