৪ লাখ ৯৬ হাজার পিস নকল অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ধার,
আটা ময়দা দিয়ে বানানো হত অ্যান্টিবায়োটিক
স্টাফ রিপোর্টার।।
আটা ময়দা দিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক বানানো চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত রোববার ডিবির মতিঝিল জোনের ডিসি রাজীব আল মাসুদের তত্ত্বাবধানে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রাজধানীর মতিঝিল ও বরিশালে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলো- শাহীন, শহীদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, হৃদয় ও হুমায়ুন। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪ লাখ ৯৬ হাজার পিস নকল অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ধার করা হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। উদ্ধার করা নকল অ্যান্টিবায়োটিকগুলো আটা, ময়দা, সুজি ও বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি করা হতো।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, চক্রটি বাজারে থাকা ও বাজার থেকে বিলুপ্ত এমন ওষুধের মধ্যে রিলামক্স-৫০০ ট্যাবলেট, মক্সিকফ-২৫০, সিপ্রোটিম-৫০০ এমজি, এমোক্সস্লিন, জিম্যাক্স, মোনাস-১০ নকল করে বাজারে ছাড়তো। তারা কাফকা ফার্মাসিউটিক্যালস, ডক্টর টিমস ফার্মাসিউটিক্যালস, জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালস, কুমুদিনী ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউনিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের ওষুধ নকল করতো।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার শহীদুল দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল কোতয়ালী থানা এলাকার নথুল্লাবাদ এলাকায় নকল বিভিন্ন প্রকার অ্যান্টিবায়োটিক মজুত করে বিভিন্ন পরিবহন ও গ্রেপ্তার শাহিনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার হুমায়ুন রাজীব অপসোনিন কোম্পানির বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরি করতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ফার্মেসিতে নকল অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করতেন তিনি। এছাড়া সিরাজুল ইসলাম ও হৃদয় নকল ওষুধ বিক্রির যাবতীয় কাজে অধিক মুনাফার জন্যে শহীদুলকে সহায়তা করতেন। কারখানায় নকল ওষুধ তৈরি করে সেগুলো কুমিল্লার আবু বক্কর নামে ব্যক্তি বিভিন্ন কুরিয়ারের মাধ্যমে শহীদুলের মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ করতেন।
তিনি বলেন, মূলত কুমিল্লার আবু বক্কর এসব নকল ওষুধ তৈরি করে শহীদুলকে দিতেন। তিনি সেগুলো বরিশালে গুদামজাত করে পরে অন্যদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। যেসব ওষুধ কোম্পানি বাংলাদেশে নেই এবং যে ওষধুগুলো বাজারে নেই সেগুলোই তারা তৈরি করে বাজারজাত করতো। এছাড়াও তারা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওষুধ নকল করে সেগুলোর ভেতরে আটা, ময়দা ও সুজি দিয়ে তৈরি করতো। পরে তা বাজারে বিক্রি করতো। আমরা তাদের কাছ থেকে দুই কোটি টাকার নকল ওষুধ উদ্ধার করেছি। এর আগেও তারা কোটি কোটি টাকার নকল ওষুধ তৈরি করে বিক্রিও করেছে। তারা গত আট থেকে ১০ বছর ধরে এই ভেজাল ওষুধ তৈরি করে আসছিল। যারা এসব ওষুধ উৎপাদন করে আমরা তাদেরও খুঁজছি। তাদের নামে এখন পর্যন্ত ১৫টি মামলা রয়েছে। আমরাও তাদের তিনজনকে আগেও গ্রেপ্তার করেছি। তারা জামিনে বেরিয়ে আবারও এই ব্যবসা শুরু করে। এখন পর্যন্ত ৮০টি ইউনানি ওষুধ কোম্পানির ভেজাল ওষুধ তৈরির বিষয়ে তথ্য তারা ওষুধ প্রশাসনকে দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছে ডিবি